ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড়, বুধ বিকেলেই আছড়ে পড়তে পারে বঙ্গে

 
শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। ঝড়ের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ওডিশা। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (NDRF) পশ্চিমবঙ্গে ৭টি ও ওডিশায় ১০টি দল পাঠিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি তৈরি রাখা হয়েছে আরও ১০টি দল। সূত্রের খবর, রাজ্যের ৬টি উপকূলীয় জেলায় ৭টি দল মোতায়েন করা হয়েছে। এই রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলি জেলায় মোতায়েন করা হচ্ছে আরও এনডিআরএফ দল। পাশের রাজ্য ওডিশার পুরী, জগত্‍‌সিংহপুর, কেন্দ্রাপাড়া, বালাসোর, জাপুর, ভদ্রক ও ময়ূরভঞ্জ জেলায় এই দল পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। জলপথ ও আকাশপথে নজরদারি চালাচ্ছে কোস্টগার্ড। সোমবার সকাল সাড়ে ছ'টায় মৌসম ভবনের তরফে প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ছ'ঘণ্টায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আগামী কয়েক ঘণ্টায় তা আরও শক্তি সঞ্চয় করবে। তারপর বুধবার বিকেল-সন্ধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের দিঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মাঝখান দিয়ে আছড়ে পড়তে পারে স্থলভূমিতে। তবে ঠিক কোন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ল্যান্ডফল হবে সেটা এখনই বলতে পারছেন না আবহবিদরা।

ইতিমধ্যেই দিঘা সহ উপকূল জুড়ে সতর্কতা জারি করল প্রশাসন। রবিবার রাত থেকেই দিঘা ও সংলগ্ন এলাকায় মাইকিং করেছে দিঘা মোহনা থানা এবং দিঘা থানার পুলিশ। ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ মে এই চারদিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া বারণ। প্রশাসন সূত্রে খবর যে সমস্ত মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন তারা বিকেলে এর মধ্যে উপকূলে ফিরে এসেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩৪ জনের একটি দল দিঘা এসে পৌঁছেছে। প্রস্তুত রয়েছে হলদিয়ার উপকূল রক্ষীবাহিনী। কাঁথি মহকুমা প্রশাসনের তরফে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান যতই তটরেখার দিকে এগিয়ে আসবে, ততই সমুদ্রে জলচ্ছ্বাসের পরিমান বাড়বে। গ্রামগুলিতে সমুদ্রের জল ঢুকে যাতে সমস্যা না হয় তারজন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রশাসন। বিশেষ করে দিঘা, শঙ্করপুর, মান্দারমনি ও তাজপুর, রামনগর এলাকায় বিপর্যয় মোকাবিলা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করা হচ্ছে।

সেক্ষেত্রে উপকূলের আশেপাশের বিদ্যালয়গুলি যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায় সেই উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন। এরজন্য ইতিমধ্যেই বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে রামনগর-১  ব্লকের বিডিও। পাশাপাশি সাইক্লোন সেন্টার ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে অস্থায়ী ত্রাণশিবির হলে সেখানে খাওয়া-দাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থা চলছে। এমনকি পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি ব্লকের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন শুকনো খাবার মজুত করা হচ্ছে। ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে পঞ্চায়েতগুলোর সমন্বয় রেখে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করার জন্য আজ বিকেলে ব্লকের ৯টি অঞ্চলের প্রধানদেরকে নিয়ে বৈঠক করছেন  বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم