
হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়কের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর থেকেই উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। রাজ্য বিজেপির অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে তাঁদের বিধায়ককে। এরজন্য সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও এটাকে খুন বলেই সরব হয়েছেন। বিজেপি ছাড়া রাজ্যের অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এই ঘটনায় অস্বাভাবিকতা নিয়ে সরব হয়েছে। যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। সবমিলিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। মঙ্গলবার ১২ ঘন্টার জন্য উত্তর দিনাজপুর জেলায় বনধ ডেকেছে জেলা বিজেপি।

বঙ্গ বিজেপির দাবি, রাজনৈতিক কারণেই খুন হয়েছেন হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়। সোমবারই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন, ‘দেহটি দেখেই মনে হচ্ছে কেউ মেরে তাঁকে ঝুলিয়ে দিয়েছে। তাঁর
আরও দাবি, ‘রাত দেড়টার সময় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন পরিবারের সবাই ঘুমাচ্ছিলেন। পরিচিত লোক হবেন নিশ্চয়ই। উনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এলাকার কারও নিশ্চয়ই অসুবিধা হচ্ছিল। পুলিশের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা উচিত। আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি জানাচ্ছি’। একই দাবি বিধায়কের পরিবারের। অপরদিকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিও এই ঘটনা নিয়ে ট্যুইট করে তৃণমূল সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি লিখেছেন, ‘রাজ্য রাজনৈতিক হিংসা কমার কোনও লক্ষণই নেই। উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ উঠছে। রাজনৈতিক হিংসা থামাতে ও সত্য সামনে আনতে নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন’।
বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায়ও এটা খুন বলেই দাবি করেছেন। বিজয়বর্গীয় বিধায়কের ঝুলন্ত দেহের ভিডিও শেয়ার করেই ট্যুইটে লেখেন, ‘নিন্দনীয় এবং কাপুরুষোচিত কাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বিজেপি নেতাদের হত্যা বন্ধ হচ্ছে না। সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে আসা হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের হত্যা করা হল। ওঁনার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওনার কি দোষ ছিল শুধুই বিজেপিতে যোগ দেওয়া?’ ট্যুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। ঘটনাটি রাজনৈতিক হিংসা বলেই দাবি করে তিনি লিখেছেন, ‘রাজ্য রাজনৈতিক হিংসা কমার কোনও লক্ষণই নেই। উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ উঠছে। রাজনৈতিক হিংসা থামাতে ও সত্য সামনে আনতে নিরপেক্ষ তদন্তের প্রয়োজন’।The suspected heinous killing of Debendra Nath Ray, BJP MLA from Hemtabad in West Bengal, is extremely shocking and deplorable. This speaks of the Gunda Raj & failure of law and order in the Mamta govt. People will not forgive such a govt in the future. We strongly condemn this.— Jagat Prakash Nadda (@JPNadda) July 13, 2020
একইভাবে কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতা আবদুল মান্নান বলেন, ‘একজন বিধায়কেরই যদি নিরাপত্তা না থাকে তবে আমরা কোন রাজ্যে বাস করছি? তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র বিজেপি নয়, অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিধায়ক-সাংসদদের ওপরও কখনো পুলিশি নির্যাতন কখনো শাসকদলের বাহিনী হামলা করছেন। হেমতাবাদের ঘটনার নিরেপেক্ষ তদন্ত হলেই দেখা যাবে এই ঘটনার পিছনে বড় মাথা রয়েছে। সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর দাবি, ‘দেবেন্দ্রনাথ রায় নিপাট সাদামাটা মানুষ ছিলেন। তাঁকে এভাবে চলে যেতে হল এটা খুবই দু:খজনক। তিনি দলত্যাগ করে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন এটা ঠিক। তবুও প্রশ্ন উঠছে এভাবে একজন মানুষকে মরতে হবে কেন? ওই এলাকায় খবর নিয়ে জেনেছি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেহটি ছিল। তবে কেউ কি মেরে ঝুলিয়ে দিল?’ যদিও গোটা ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেনি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল খুনের অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘উনি তো আগে সিপিএম করতেন। তারপর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আত্মহত্যা করেছেন বলে আজ সকাল খবর পেয়েছি। সত্যিটা সামনে আসুক। পুলিশ পুরো তদন্ত করে দেখুক। তাঁকে যদি খুন করা হয়, তাহলে দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া হোক’।Political violence and vendetta @MamataOfficial shows no signs of abating.— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) July 13, 2020
Death of Debendra Nath Roy, Hemtabad MLA-Uttar Dinajpur District, raises serious issues including allegations of murder.
Need for thorough impartial probe to unravel truth and blunt political violence.
Mamata devi, CPM could not hold power by resorting to political violence, you too won’t be able to retain power by unleashing political violence. People of West Bengal will never forgive you. #DemocracyKillerMamata— Mukul Roy (@MukulR_Official) July 13, 2020
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback