শুভেন্দু-দিলীপ-কৈলাশ-মুকুলের সভায় হাজির নন্দীগ্রামের ‘শহিদ’ পরিবার

নন্দীগ্রামে একই মঞ্চে হাজির দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এবং মধ্যমনি শুভেন্দু অধিকারী। এদিনের জনসভায় শাসকদলকে কার্যত টেক্কা দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সভায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে শুভেন্দু সবচেয়ে বড় চমক দিনেল নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবারের সদস্যদের মঞ্চে হাজির করিয়ে। একপাশে শহিদ পরিবারের সদস্যদের বসার জন্য আলাদা করে ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। সভার পর তাঁরাও জানিয়ে দিলেন, দাদা (শুভেন্দু) যেখানে থাকবেন আমরাও সেখানেই থাকবো। নন্দীগ্রাম আন্দোলনে বর্তমান শাসকদলের কর্মী হিসেবে সামনের সারিতে লড়াই করেই শহিদ হয়েছিলেন কয়েকজন। বিগত ১৪ বছর ধরে তাঁদের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলেছেন শুভেন্দু। এবার দল বদলে শুভেন্দু এখন বিজেপি নেতা, কিন্তু তাঁর পরেও যোগাযোগ ছাড়েননি তিনি। শুক্রবার নন্দীগ্রামের মেগা জনসভাতেও তাই শহিদ পরিবারের সদস্যরা বিজেপির মঞ্চে হাজির থাকলেন দাদার অনুগামী হয়েই।

নন্দীগ্রামের এই হাই প্রোফাইল সভা ঘিরে উত্তেজনা ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু সভার মাঝপথে একবার তাল কাটলো একবার। মুকুল রায়ের পর ভাষণ দিতে ওঠেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। তাঁর ভাষণের মাঝেই সামান্য বিশৃঙ্খলা দেখা যায় দর্শকাসনে। কৈলাশ ভাষণ থামিয়ে কর্মী সমর্থকদের শান্ত হতে বলেন। কিন্তু সমস্যা থামেনি, এরপর মাইক হাতে কর্মীদের বোঝান শুভেন্দু। তিনি বলেন, আমাকে বিশ্বাস করেন তো! ১-২জন লোক সভা ভণ্ডুল করতে এসেছিল। এরপরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এদিন জনসভায় বিজেপি নেতৃত্ব প্রথম থেকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, এদিন শুভেন্দুর হাত ধরে কয়েকজন নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের বাড়িতে পুলিশ পোস্টিং করা হয়েছে। এমনকি বাথরুমেও পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে। এখানে হাজার হাজার মানুষ যাঁরা আন্দোলন করেছিলেন দাম পান না। আমি সকলকে বিজেপিতে স্বাগত জানাচ্ছি। নন্দীগ্রামের সৈনিকরা রাত জেগে যাঁরা পরিবর্তন এনেছিলেন। আজ তাঁরাই সম্মান পান না। রক্ত দিয়ে ঘাম দিয়ে যাঁরা টিএমসি-কে তৈরি করেছিলেন, আজ তাঁরা বিজেপি-র পাশে। এরপরই তৃণমূল নেত্রীকে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন পুলিস দিয়ে ভাঙিয়ে সবাইকে যোগ দেওয়া করিয়েছিলেন। আপনিও বিশ্বাসঘাতকতার দিন ভুলে গেছেন’। এদিন শুভেন্দুর ঢালাও প্রশংশা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, আমি আজ অতিথি শিল্পী, আসল নায়ক তো শুভেন্দু।

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় বলেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শুভেন্দু। এদিনের ভাষণে সিঙ্গুর প্রসঙ্গও উঠে আসে। মুকুলের দাবি, টাটাদের সিঙ্গুরে ফেরাতে এবার প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবো। বাংলায় আরও একটা পরিবর্তন দেখতে চাই বলেও সুর চড়িয়েছেন মুকুল রায়। কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেন, এনডিএ-এর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এবার সেই বিশ্বাসঘাতকদের ধাক্কা দেওয়ার সময় এসেছে। আর আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনেই সেই সুযোগ এসেছে। পাশাপাশি এদিনও ফের তিনি  কয়লা মাফিয়া, গরু পাচার, কাটমানি, তোলাবাজি নিয়েও শাসকদলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেন, ‘গরু মাফিয়া কে? কয়লা মাফিয়া কে? বিনয় মিশ্রর সঙ্গে বিদেশ গিয়েছিলেন ভাইপো।  কে এই বিনয় মিশ্র? সিবিআই চেপে ধরলেই জেলে যেতে হবে ভাইপোকে’। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

أحدث أقدم