কলকাতা-হাওড়ায় শিকেয় দূরত্ব বিধি, বাড়ছে আশঙ্কা


কোথায় লকডাউন? চতুর্থ দফায় লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই কলকাতা ও হাওড়ায় দূরত্ব বিধি শিকেয় উঠেছে। ঘূর্ণিঝড় আমফান চলে যেতেই রাস্তায় নেমেছেন এই জোড়া শহরের বাসিন্দারা। কোথাও নেই বিদ্যুৎ, কোথাও নেই পানীয় জল, কোথাও এখনও গাছ-ইলেকট্রিক পোল পড়ে রয়েছে বিপদজনকভাবে। ফলে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসছেন ক্ষুব্ধ মানুষজন। এর ওপর লকডাউন শিথিল হতেই শুরু হয়েছে কাজে যোগদানের হিড়িক। চলছে বাস-ট্যাক্সি, রাস্তায় সংখ্যা বেড়েছে প্রাইভেট গাড়ি ও দু-চাকার। খুলছে দোকানপাট, বাজার। সব মিলিয়ে ফের চেনা ছন্দে কল্লোলিনী কলকাতা। এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চিকিৎসকমহল। নতুন করে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। এর আগে রাজ্যের সর্বত্র করোনা সংক্রমণ ধরে তিনটি জোনে ভাগ করেছিল রাজ্য সরকার। খোদ কলকাতায় মোট ২৮৬টি কন্টেনমেন্ট জোন বা ‘এ’ জোন রয়েছে। সোম-মঙ্গলবার এই এ জোনেও খুলেছে বহু দোকান-বাজার। ফলে রাস্তাঘাটে ভিড় বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। উত্তর কলকাতার রবীন্দ্র সরণি, রাধাকান্ত দেব লেন, বিপিনবিহারী স্ট্রিট, রাজা মনীন্দ্র রোড, শোভাবাজার স্ট্রিটের মতো এলাকা কন্টেনমেন্ট জোনের আওতায় রয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত এলাকাতেই গত দু-তিনদিন ধরে যথেষ্ট ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একই ছবি ধরা পড়ছে বেলেঘাটা মেন রোড, আমহার্স্ট স্ট্রিট, রাজাবাজার ও নারকেলডাঙা মেন রোডেও। প্রত্যেকটি এলাকাই এ জোন হিসেবে চিহ্নিত কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইটে। অপরদিকে দক্ষিণ কলকাতার পার্ক স্ট্রিট, কড়েয়া, বন্ডেল রোড, কুষ্ঠিয়া রোড, তিলজলা, শিবতলা লেন, পিকনিক গার্ডেন, চক্রবেড়িয়া রোড, একবালপুর, আলিপুর রোড, খিদিরপুর কমিশনারেট রোড, টালিগঞ্জ, চারু মার্কেট, হরিদেবপুর থানা এলাকার দাসপাড়া, জেমস লং সরণি রয়েছে কন্টেনমেন্ট জোনে। সেখানেও কোনও দূরত্ব বিধির বালাই নেই। দোকান বাজারে মানুষের উপস্থিতি রয়েছে চোখে পড়ার মতো। একই পরিস্থিতি হাওড়ার কন্টেনমেন্ট জোনগুলিতেও। এখানে ৮৮টি এলাকা ‘এ’ জোনের মধ্যে রয়েছে। বড় রাস্তা থেকে হাওড়ার অলি-গলিতে রবিবার থেকেই ভিড় বেড়েছে। খুলে গিয়েছে অধিকাংশ দোকানপাট। দূরত্ব বিধি না মেনেই জনে জনে রাস্তায় নামছে মানুষ। ফলে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। স্বাস্থ্যদফতরের এক কর্তার কথায়, ‘যেভাবে মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছেন, দূরত্ববিধি, সুরক্ষা বিধি কিছুই মানছেন না। তাতে অনিবার্যভাবেই করোনা সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে কালঘাম ছুটবে’। অপরদিকে পুলিশ কর্তাদের দাবি, ঘূর্ণিঝড় আমফানে বিপর্যস্ত এলাকাগুলিতে পরিষেবা স্বাভাবিক করতে ও মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভ মেটাতেই ব্যস্ত পুলিশকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে কন্টেনমেন্ট জোনগুলি গার্ডরেল ও দড়ি দিয়ে বেঁধে আলাদা করার চেষ্টা করছে পুলিশ। কিন্তু নজরদারি চালানোর পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই পুলিশের। ফলে অবাধে সাধারণ মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post