ছেলে, নাতির অত্যাচারে ঘরছাড়া পুতুল দাদু, পুতুল দিদা


ছেলে ও নাতির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে রাস্তার পাশে একটি গুমটি ঘরে আশ্রয় নিতে হল রায়গঞ্জের সকলের প্রিয় মৃৎশিল্পী পুতুল দাদু ও পুতুল দিদাকে। লকডাউনের মধ্যে সুভাষগঞ্জের কুলিক ব্রিজের পাশে ছোট্ট একটি গুমটি ঘরে কোনওমতে দিন কাটছে ৮০ বছরের বৃদ্ধ কার্তিক পাল এবং ৭১ বছরের হিরণবালা পালের। জুটছে না খাবার। পুতুল দাদু ওরফে কার্তিক পাল রায়গঞ্জের একজন প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী।তার তৈরি নানা ধরনের পুতুল দুর্গা, কালী, শিব, সরস্বতী রায়গঞ্জের প্রায় প্রতিটি বাড়ির আলমারিতে শোভা পায়। একসময় শিশুরা তাদের মনের মতো পুতুল পেতে হাজির হত পুতুলদাদুর কাছে। কিন্তু তাদের পুতুলদাদু আজ নিদারুন কষ্টে। সুভাষগঞ্জে নিজস্ব বাড়ি থাকলেও নাতি সঞ্জয় পালের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছেন। তিন কাঠা নিজের নামে এবং দুই কাঠা ছেলের নামে জমি থাকলেও প্রাণটা বাঁচাতে সুভাষগঞ্জের রাস্তায় কুলিক ব্রিজের পাশে একটি ছোট্ট গুমটির মধ্যে স্ত্রীকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। পারিবারিক সম্মানহানির ভয়ে যাননি পুলিশের কাছে। বৃদ্ধার বিশ্বাস, একদিন তারা ভুল বুঝবে। আমি তো তাদের কোনও ক্ষতি করিনি। জানি না ভগবান কবে মুখ তুলে দেখবে। এখন নিজে পুতুল তৈরি করতে পারেন না। কৃষ্ণনগরের কিছু মাটির পুতুল ও প্রতিমা ব্যাগে নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন। কোনওদিন আয় হয় ৫০ টাকা। আবার কোনওদিন কিছুই হয় না। যে ঘরে তাঁরা থাকেন সেই ঘরে নেই বৈদ্যুতিক বাতি। কুপি এবং মোমবাতি জ্বালিয়ে থাকতে হয় তাঁদের। কার্তিকবাবুর সঙ্গে দেখা করেন রায়গঞ্জ প্রবীণ নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা। সংগঠনের পক্ষে রথীন্দ্র দেব বলেন,” গার্হস্থ্য হিংসার শিকার কার্তিকবাবু ও তার স্ত্রী। ছেলে, নাতির অত্যাচারে তারা বাড়িছাড়া। আমরা বিষয়টি প্রশাসনকে জানাব। নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post