কর্দমাক্ত বলিউড

   প্রসূন গুপ্ত

সিনেমা জগৎ এবং তা যদি মুম্বই হয় তবে স্ক্যান্ডালের গল্প থাকবেই, চিরদিনই ছিল। শুধু ব্যক্তিগত জীবন নয়, শিল্পীদের রাজনৈতিক জীবন নিয়েও খবর হয়েছে। কিন্তু এতদিন বলিউড নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করেনি। রাজ কাপুর কমিউনিস্ট ছিলেন কিন্তু ঘোর কংগ্রেসি দিলীপ কুমারের সাথে বৈরিতা তৈরি হয়নি। একদিকে সুনীল দত্ত, অমিতাভ বচ্চন, রাজেশ খান্নারা যেমন কংগ্রেসের হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছেন, মন্ত্রী হয়েছেন। তেমনই শত্রুঘ্ন সিনহা, বিনোদ খান্নার মত তারকারা বিজেপির টিকিটে জিতে মন্ত্রী হয়েছেন। বলিউডে এর কোনও প্রভাব তো পড়েইনি বরং ক্ষমতায় থাকা নেতারা নানা সহযোগিতা করেছেন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির।
কিন্তু আজ সুশান্ত রহস্যমৃত্যু নিয়ে মুম্বইতে যে কাদা ছোড়াছুড়ি হচ্ছে তাতে সিনেমাজগতের ক্ষতি হচ্ছে প্রবল। আমির খান বলেছিলেন, করোনা আমাদের অনেক কিছু কেড়ে নিচ্ছে। বলেননি যা তা ‘চরিত্র’। এখন এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির অন্যতম চরিত্র কঙ্গনা রানাউত। তিনি যে ভাবে অভিনেতা অভিনেত্রীকে নেশাখোর বা যৌন সঙ্কটযুক্ত বলেছেন তা শুনে অনেকেই আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শুধু বলিউডেই থামেননি কঙ্গনা, সরাসরি রাজনৈতিক দল শিবসেনার সঙ্গেও সংঘতে গিয়েছেন। মুম্বইকে তুলনা করেছেন ‘পাক অধিকৃত কাশ্মীরের’ সঙ্গে। তার ফলও ভুগতেও হচ্ছে তাঁকে। তাঁর মুম্বইয়ের অফিসের একাংশ ভাঙা হয়েছে।
আবার মুম্বাইকার ঠাকরে পরিবারকে টুইট করে আক্রমণ করেছেন। শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের সাথে চলেছে রোজ টুইট-যুদ্ধ। এবারে বলিউডের শিল্পী কলাকুশলীরাও দু-ভাগে ভাগ হয়ে গিয়ে বাকযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। এরই মাঝে কলকাতা নিবাসী কঙ্গনার ফ্যান টালিগঞ্জের যুবক পলাশ বসুকে গ্রেফতার করেছে মুম্বই পুলিশ। পুলিশের দাবি তিনি নাকি সঞ্জয় রাউতকে ফোনে হুমকি দিয়েছেন। সবমিলিয়ে শান্তিপ্রিয় প্রযোজক, পরিচালকদের একটা অংশ মনে করছেন, করোনা আবহে এমনিতেই কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে তার উপর এই রাজনীতি চললে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ইন্ডাস্ট্রিস লাটে উঠবে। যার উপর দাঁড়িয়ে ভারতীয় অর্থনীতির এক বিরাট অংশ।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post