ঘুমের আদবকায়দা

আপনি কি চিৎ হয়ে, উপুড় হয়ে কিংবা কাত হয়ে ঘুমাতে পছন্দ করেন? ঘুমের জন্য কোন অবস্থান বা ভঙ্গি বিজ্ঞানসম্মত? অনেকেই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ে কিংবা কোমরে ব্যথা অনুভব করেন। কারও কারও হাত বা পা অবশ, ঝিনঝিন অথবা জয়েন্ট শক্ত বা স্টিফ বোধ করেন। আমরা অনেকেই জানি না যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসবের জন্য দায়ী আমাদের ঘুমের অভ্যাসজনিত ভুল ভঙ্গি।

যাঁদের ঘাড়, কোমর বা কাঁধে ব্যথা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ভালো ঘুমের পজিশন হলো যেকোনো একদিকে কাত হয়ে ঘুমানো। খেয়াল রাখতে হবে বালিশ যেন ঘাড়ে থাকে। অনেকের ঘুমানোর সময় বালিশে কেবল মাথা থাকে, ঘাড়ের অংশটুকু ফাঁকা থাকে। ফলে ঘাড়ের মাংসপেশি ও লিগামেন্ট টান টান হয়ে থাকে এবং দীর্ঘ সময় এভাবে থাকার কারণে ঘাড়ে ব্যথা হয়। তাই বালিশ অবশ্যই ঘাড়ের নিচে দিতে হবে। বেশি ওপরে নয়, একদম নীচেও নয়। কিন্তু কেউ যদি চিৎ হয়ে ঘুমাতে চান, তাহলে অবশ্যই পায়ের নিচে বালিশ দিতে হবে।

যাঁদের নাক ডাকার রোগ রয়েছে, তাঁদের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ঘুমের ভঙ্গি ঠিক করতে হবে। যেমন কারও যদি অল্পমাত্রার সমস্যা থাকে, তাহলে চিৎ হয়ে শুতে হবে। আবার যদি বেশি মাত্রার নাক ডাকার সমস্যা হয়, তাহলে কাত হয়ে শুতে হবে। তবে কোনোভাবেই উপুড় হয়ে বা পেটে ভর দিয়ে ঘুমানো যাবে না। এতে করে শ্বাস-শ্বাসের পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

আবার যাঁদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে, বিশেষ করে যাঁদের খাবার খাওয়ার পর পেট জ্বালাপোড়া করে বা হার্ট বার্ন হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে বাঁ দিকে কাত হয়ে ঘুমানো ভালো। ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমালে অ্যাসিড আরও বেশি নিঃসরণ হয়। চিৎ বা উপুড় হয়ে ঘুমালেও গ্যাসের সমস্যা বাড়ে।

গর্ভকালীন সময়ে সবচেয়ে ভালো ভঙ্গি হলো বাঁ দিকে কাত হয়ে ঘুমানো। এর ফলে রক্ত চলাচল সহজ হয়, যা বাচ্চা ও মায়ের জন্য জরুরি। এ ক্ষেত্রে দুই হাঁটুর নিচে বালিশ দিতে হবে। একইভাবে পেটের নীচে একটা বালিশ দিয়ে মেরুদণ্ডের অ্যালাইনমেন্ট ঠিক রাখতে হবে।

ঘুমের জন্য সঠিক বিছানাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন, কোমরের ব্যথায় শক্ত বিছানায় ঘুমানো উচিত। অনেকে ব্যথা কমাতে শক্ত মেঝেতে শুয়ে থাকেন। আসলে এটি ঠিক নয়। বিছানা অবশ্যই আরামদায়ক হতে হবে। খুব বেশি নরম বা খুব বেশি শক্ত নয়। সাধারণ জাজিমের ওপর পাতলা তোশক যথেষ্ট। বিছানার চাদর, বালিশ ও তোশক পরিষ্কার রাখা জরুরি। মাঝে মাঝে তপ্ত রোদে দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা উচিত। (প্রথম আলো)

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post