জঙ্গলমহলকে ফের অশান্ত হতে দেব না, হুঁশিয়ারি মমতার

 

ফের জঙ্গলমহলে মাথাচাড়া দিচ্ছে মাওবাদীরা। কেউ কেউ তাঁদের টাকা দিয়ে সাহায্য করছে। তবে কোনওভাবেই জঙ্গলমহলকে ফের অশান্ত হতে দেব না। বুধবার ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে জঙ্গলমহলে মাওবাদী কার্যকলাপ নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফরের দ্বিতীয় দিনে ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রী প্রশানিক কর্তাদের নির্দেশ দিলেন, ‘অনেক কষ্ট করে রক্তাক্ত জঙ্গলমহলকে শান্ত করেছি। অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। আবার অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে, আপনারা কড়া ব্যবস্থা নিন’। পাশাপাশি এদিন মাওবাদী হামলায় নিহত চারজনের পরিবারের একজন করে সদস্যকে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গেই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে আদিবাসীদের মন জয় করার চেষ্টা করলেন তিনি। মাহাতো-কুরমি-লোধা-শবরের জনজাতির উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, ‘যা বলবেন সব করে দেব। কিন্তু আমাকে ভুল বুঝবেন না। মা-মাটি-মানুষের সরকারের পাশে থাকুন’। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত, জঙ্গলমহলে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে ধাক্কা লেগেছে। গত লোকসভায় বিজেপির কাছে পর্যুজদস্ত হতে হয়েছে তৃণমূলকে। তাই বিধানসভার আগে ধাক্কা সামলানোর উদ্দেশ্যে আদিবাসী সমাজকে পাশে থাকার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

অপরদিকে বিজেপিকেও তীব্র আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে গেরুয়া শিবির আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘আজকে সারা দেশে আদিবাসী-দলিতরা সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত। আমি সবাইকে মানুষ হিসাবে মনে করি। সম্মান দিই। আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য আমার সরকার সবসময় পাশে থাকবে’। প্রশাসনিক বৈঠকেই ঝাড়গ্রামের বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ অবৈধ বালি পাচার নিয়ে অভিযোগ করেন। সেটা শুনেই রীতিমতো ক্ষেপে যান মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে নির্দেশ দেন, ‘বারবার কেন বলতে হয় এক কথা? কতবার বলেছি যারা এসব কাজ করছে তাঁদের চিহ্নিত করুন। কাদের এত ইন্টারেস্ট? স্ট্রং অ্যাকশন নিন। প্রয়োজনে কয়েকজনকে অ্যারেস্ট করুন’। পাশাপাশি সদ্য ঘোষিত পথশ্রী প্রকল্প নিয়েও বার্তা দেন দলীয় নেতা-কর্মীদের। অনেকটা হুঁশিয়ারির সুরেই তিনি বলেন, ‘পথশ্রী প্রকল্পের কাজে বাধা দেবেন না। টেন্ডার নিয়ে কোনও গন্ডগোল যেন না হয়। সব পঞ্চায়েত, সব রাজনৈতিক নেতৃত্বকে বলছি’। এছাড়া ঝাড়গ্রামের সভা থেকেই সাঁওতাল অ্যাকাডেমির জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post