আনলক পর্বে সিনেমা হলের দরজা খুলেছে মাত্র কয়েক সপ্তাহ হয়েছে। এরমধ্যেই একের পর এক সিনেমা হলের ঝাঁপ ফের বন্ধ হতে শুরু করেছে। শনিবার সকাল থেকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হল কলকাতা ও শহরতলির কয়েকটি সিনেমা হলে। মূলত সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হলেই লকআউটের খাঁড়া নামছে। ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়েছে জয়া, প্রাচী, প্রিয়া, মেনকা, অশোকা, ইন্দিরা, বায়োস্কোপ (দুর্গাপুর), ডাকবাংলোর (বারাসত) মতো কয়েকটি সিঙ্গল স্ক্রিন সিনেমা হল। মালিকদের কথায়, সরকারি গাইডলাইন মেনেই হল খোলা হয়েছিল। কিন্তু লাভের মুখ দেখা তো দূর অস্ত, খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণের জেরে দীর্ঘদিন ছিল লকডাউন। এই সময়ে সিনেমা হলগুলি যেমন বন্ধ ছিল, তেমনই বন্ধ ছিল শুটিং। তাই আনলক পর্বে নিউ নর্মালে শুটিং শুরু হলেও এখনও সেই অর্থে কোনও সিনেমা রিলিজ হয়নি। আর যে সমস্ত সিনেমার শুটিং সহ যাবতীয় কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল লকডাউনের আগে, সেগুলি সব ওটিটি প্ল্যাটফর্মে রিলিজ করে লকডাউনের মধ্যে। তাই সেগুলি বাড়িতে বসেই দেখে ফেলেছেন সিংহভাগ দর্শক। ফলে হলে এসে সিনেমা দেখার আগ্রহ হারিয়েছেন অনেকেই। ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচারস অ্যাসোসিয়েশনের (EIMPA) ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডিস্ট্রিবিউটর সুভাষ দত্তের কন্ঠেও হতাশার সুর।
তিনি জানিয়েছেন, সিঙ্গল সিনেমা হলগুলির অবস্থা খুবই খারাপ। মাল্টিপ্লেক্সগুলিও ধুঁকছে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষ সিনেমা ‘সাঁঝবাতি’ কলকাতার ২২টি হলে রিলিজ করলেও দর্শক নেই। এমনকি কোনও কোনও শো-তে চার-পাঁচ জন দর্শক ছিলেন। তাই হল আর চালাতে চাইছেন না অনেক হল মালিক। আবার দর্শকরা হলে গিয়ে পুরানো সিনেমা দেখতে একেবারেই নারাজ। এক হল মালিকের দাবি, সরকারি গাইডলাইন মেনে খুব তারাতারি আমাদের হল খুলতে হয়েছে। তাই দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অনেক হলের আভ্যন্তরীন অবস্থা খুব খারাপ। সেই কারণেও দর্শকরা আসতে চাইছেন না।যদিও একসঙ্গে এতগুলি হল বন্ধ হওয়ায় অনেকেই অশনি সংকেত দেখছেন। এটা বাংলা সিনেমার কাছে সতর্কতামূলক ইঙ্গিত। লকডাউনের আগে বাংলা সিনেমাকে ঘিরেই সিঙ্গল স্ক্রিন হল গুলি আশায় বুক বেধেছিল। কিন্তু লকডাউন পরবর্তী সময়ে সেই অর্থে কোনও সিনেমা রিলিজ করেনি। তবে বড়দিনের মধ্যে একঝাঁক বাংলা সিনেমা রিলিজের অপেক্ষায়। তখন হয়তো ফের স্বমহিমায় ফিরবে রাজ্যের সিনেমা হলগুলি। আশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন কলকাতা ও জেলার অসংখ্য সিনেমা হল মালিক এবং হল কর্মীরা।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback