তৃণমূল এখন দূষিত পুকুর, এবার বেসুরো হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র

লক্ষ্মীরতন শুক্লা মঙ্গলবারই মন্ত্রিত্ব এবং জেলা সভাপতির পদ ছেড়েছেন। কিন্তু কেন তিনি এই সিদ্ধান্ত নিলেন সেটা নিয়ে মুখ খোলেননি লক্ষ্মী। কিন্তু এরপর থেকেই একের পর এক নেতা-নেত্রী লক্ষ্মীর পাশে দাঁড়িয়ে শাসকদলকেই আক্রমণ করে বসেন। এই দলে নবতম সংযোজন হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা রথীন চক্রবর্তী। তিনিও লক্ষ্মীরতনের পাশে দাঁড়িয়ে শাসকদলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। 

বুধবার সকালে সিএন নিউজ-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ‘হাওড়ার তৃণমূল কংগ্রেসের পরিবেশ এখন দুষিত পুকুরের মতো হয়েছে। এখানে কেউ ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন না। এখানে সুস্থ, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ থাকতে পারছেন না। সেই জন্য অনেকেই চাইছেন এই দূষিত পুকুর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে। এখানেও এই ঘটনাই ঘটেছে’। রথীনবাবুর প্রশ্ন, ক্লাসে কিছু কিছু ছাত্র থাকে যারা নিজেরা পড়াশোনা করে না। অন্য কাউকেও পড়াশোনা করতে দেয় না। এই দলেও এখন সেরকম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা কি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি নাকি, যেখানে আমি ছাড়া কাউকে অ্যালাউ করব না ? হাওড়ার প্রাক্তন মেয়রের আরও বিস্ফোরক দাবি, ‘এখানেও কাউকে কাজ করতে দেওয়া হয় না, কেউ কাজ করতে গেলে নানা রকমভাবে দোষারোপ করে, উল্টোপাল্টা কথা বলে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়’। তাঁর আক্ষেপ, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বও এই ব্যাপারে নীরব বা ওই সমস্ত নেতাদের কথাই বিশ্বাস করেন, এবং সেইভাবেই চলেন’। ফলে যাঁরা ভালো কাজ করতে চান, তাঁরা ব্যাকসিটে চলে আসছেন। 

লক্ষ্মীরতন হাওড়া জেলা সভাপতি পদে পদত্যাগ করার পর সেই জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভাস্কর ভট্টাচার্যকে। এই প্রসঙ্গে রথীন চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, ‘এক্স-এর জায়গায় ওয়াই এসেছেন, এতে বিশাল কিছু পরিবর্তন হবে না’। এদিন রাজ্যের মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অরূপ রায়ের বিরুদ্ধেও নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন রথীন চক্রবর্তী। অরূপ রায়কে ‘হাওড়ার একমাত্র সিটিজেন’ বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘উনিই একমাত্র বোঝেন, এতবড় নেতা, ওনারই সব দায়দায়িত্ব হাওড়া নিয়ে। এক্ষেত্রে আমার বলার কিছু নেই’। আর লক্ষ্মীর সরে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে রথীনবাবুর বক্তব্য, এটা দলের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতি। এর আগে হাওড়া বালির বিধায়ক বৈশালি ডালমিয়াও বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন। তিনিও লক্ষ্মীরতন ইস্যুতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেই দায়ি করেছিলেন। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, তৃণমূল নেতাদের একাংশ দলটাকে উইপোকার মতো কুরে কুরে খাচ্ছে। পুরনো কর্মীদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। নতুন কর্মীদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে না। সবমিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলেরই একাংশের ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ছে অনবরত। 

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.