ফ্যানস ক্লাবে শতাব্দীর ইঙ্গিতপূর্ণ খোলা চিঠি, তবে কি…

তাঁর ফেসবুক ফ্যানস ক্লাবের একটি পেজে একটি ছোট্ট খোলা চিঠিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। তিনি শতাব্দী রায়, তৃণমূলের দুবারের সাংসদ। বোলপুর তথা বীরভূমের মানুষের উদ্দেশ্যে এই খোলা চিঠি আসলে তাঁর মানসিক কষ্ট ও মানুষের মাঝে পৌঁছাতে না পারার হাহাকার ফুটে উঠলেও গভীরে রয়েছে দলের প্রতি ও নেতাদের একাংশের প্রতি বিশেষ বার্তা। আদৌ ওই ফেসবুক পোস্ট শতাব্দী নিজে করেছেন কিনা সেটা পরিষ্কার নয়। তবুও পোস্টটি ভাইরাল হওয়ার পরও বীরভূমের তৃণমূল সাংসদের মৌনতা সম্মতিরই লক্ষণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

কী আছে ওই পোস্টে? 

শতাব্দীর নামেই ওই পোস্টে দীর্ঘ একটি চিঠি লেখা হয়েছে শতাব্দী রায় ফ্যানস ক্লাবের দেওয়ালে। লেখা হয়েছে, ‘এলাকার সঙ্গে আমার নিয়মিত নিবিড় যোগাযোগ। কিন্তু ইদানিং অনেকে আমাকে প্রশ্ন করছেন কেন আমাকে বহু কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। তাঁদের বলছি যে আমি সর্বত্র যেতে চাই। আপনাদের সঙ্গে থাকতে আমার ভালো লাগে। কিন্তু মনে হয় কেউ কেউ চায় না আমি আপনাদের কাছে যাই। বহু কর্মসূচির খবর আমাকে দেওয়া হয় না। না জানলে আমি যাব কী করে? এ নিয়ে আমারও মানসিক কষ্ট হয়’। এর থেকে পরিষ্কার, বীরভূম জেলা তৃণমূলের অনেক কর্মসূচিতেই সাংসদকে ডাকা হয়না। প্রচ্ছন্নভাবে ইঙ্গিত যে বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দিকেই সেটা বোঝাই যাচ্ছে। সাম্প্রতিক অতীতে বোলপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোজ শো-য় সাংসদ শতাব্দী রায়কে দলনেত্রীর পাশে আগাগোড়াই হাঁটতে দেখা গিয়েছে। তবুও দলের ও বহু সরকারি কর্মসূচির মঞ্চে তাঁকে সুদূর অতীতে দেখা যায়নি। তাঁর চিঠির দ্বিতীয় ছত্রে যা লেখা হয়েছে সেটা কার্যত বিদ্রোহের ইঙ্গিত। ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘নতুন বছরে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করছি যাতে আপনাদের সঙ্গে পুরোপুরি থাকতে পারি। আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ২০০৯ সাল থেকে আপনারা আমাকে সমর্থন করে লোকসভায় পাঠিয়েছেন। আশা করি ভবিষ্যতেও আপনাদের ভালোবাসা পাব’। 

চিঠির একেবারে শেষে লেখা হয়েছে, ‘কোনও সিদ্ধান্ত নিলে আগামী ১৬ জানুয়ারি বেলা দুটোয় জানাব’৷ এখন প্রশ্ন উঠছে, তবে কি শতাব্দী রায়ও এবার বেসুরো? তিনিও কি দল ছাড়ছেন? উত্তরে কিছুই বলেননি বীরভূমের সাংসদ। তাঁর সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। তবে যার বিরুদ্ধে প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত, সেই অনুব্রত মণ্ডল অবশ্য জানিয়ে দিলেন, এসব তিনি পাত্তা দিতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘যাকে জানাবে জানাক। দলের চেয়ারপার্সন তো আমি নই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে জানালে তিনি যা ভালো বুঝবেন করবেন। আমি চাষার ঘরের ছেলে। অত ভনিতা, ইঙ্গিত বুঝি না’। ফলে আপাতত শনিবার দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা। 




Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post