লক্ষ্মী-শতাব্দীর পর এবার প্রসুন, বললেন দল আমাকেও ক্ষমতা দেয়নি!

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না শাসকদলের। বিধানসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে ততই দলের প্রতি বিধায়ক, সাংসদদের ক্ষোভ সামনে চলে আসছে। বৃহস্পতিবারই বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ তথা প্রাক্তন টলিউড অভিনেত্রী শতাব্দী রায় দলের প্রতি অসহযোগীতার অভিযোগ তুলে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন। এবার আরেক তৃণমূল সাংসদ একই অভিযোগ করলেন। সিএন নিউজের ক্যামেরায় একান্ত সাক্ষাৎকারে হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন নিজের ক্ষোভ। ক্ষোভ উগড়ে দিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতিও। এদিন প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিস্ফোরক দাবি, ‘দল আমাকে কোনও রাজনৈতিক ক্ষমতাই দেয়নি। জেলায় কে সভাপতি হচ্ছেন, কে চেয়ারম্যন হচ্ছেন সেটা খবর পড়ে বা টিভি দেখেই জানতে পারি’। তিনি আরও অভিযোগ করেন, এই নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বহুবার আলোচনায় বসতে চেয়েছি, কিন্তু কোনও সাড়া পাইনি, আক্ষেপ প্রসুনের। 

তাঁর ক্ষোভের কারণ হাওড়া জেলা তৃণমূলের এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাই, সেটা তাঁর কথাতেই পরিস্কার। এদিন সাংসদ প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, হাওড়ার অরূপ রায়ের সঙ্গে লক্ষ্মীরতন শুক্লা, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বৈশালি ডালমিয়ার সঙ্গে বিরোধের কথা শুনেছি, বিরোধ আছেও। এই নিয়ে প্রসুনবাবুর ব্যাখ্যা, ‘দলে কখন কোন পদে বসছে, কে যাচ্ছে, কে আসছে আমি কিছুই জানতে পারছি না। অথচ আমি তিনবারের সাংসদ কিন্তু আমার সঙ্গে কোনও আলোচনাও করেনি’। হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ দলের প্রতি নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেছেন, তৃণমূলে এখন ৭০০ মুখপাত্র, তার মধ্যে একজন কুণাল দাস (কুণাল ঘোষ বলেন নি)। তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর নিয়েও তিনি নিজের হতাশা প্রকাশ করেছেন এদিন। সিএন নিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি এই পিকে-কে (প্রশান্ত কিশোর) চিনি না, তবে আমার দাদা ছিলেন পিকে (পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়)। এই পিকে-র কোনও কর্মসূচিতেই আমাকে ডাকা হয়না বা আমাকে কোনও কর্মসূচিও দেওয়া হয়না। এছাড়া দলের শীর্ষ নেতৃত্বও আমার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেন না। 

উল্লেখ্য, হাওড়ায় তৃণমূলের একাংশের অন্দরে ক্ষোভ দীর্ঘদিন ধরেই ধিকিধিকি জ্বলছে। লক্ষ্ণীরতন শুক্লা সম্প্রতি মন্ত্রীত্ব ও দলের সাংগঠনিক পদ ছেড়েছেন কার্যত একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করে। তাঁর আগে থেকেই বেসুরো গাইছেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলার তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও নিজের ফেসবুক পেজে শুক্রবার জানিয়ে দিয়েছেন আগামীকাল অর্থাৎ শনিবার ফেসবুকে লাইভ হবেন। হাওড়ার আরেক তৃণমূল বিধায়ক বৈশালি ডালমিয়াও লক্ষ্মীর পাশে দাঁড়িয়ে দলের প্রতি ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন হাওড়ার সাংসদ প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে ভোট যত এগিয়ে আসছে ততই রক্তচাপ বাড়ছে শাসকদলের। 



Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post