নতুন বছরে কোন জাদু কাঠির ছোঁয়ায় বদলে গেল এসসি ইস্টবেঙ্গল?

আইএসএল অভিযান শুরুর তিন ম্যাচে হারের সম্মুখীন হতে হয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। আট নম্বর ম্যাচে আসে প্রথম জয়। তবে সেটা নতুন বছরের শুরুতে এসে। ফলে নতুন বছরের উপহার হিসেবে সমর্থকদের কাছে অন্যরকম ভাবে ধরা দিয়েছে লাল-হলুদ দল। তিনটির মধ্যে দুটিতে জয় ও একটি ম্যাচে ১০ খেলেও ড্র করেছে ড্যানি ফক্সরা। ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে দেখা যাচ্ছে এসসি ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল। যা দেখে আশায় বুক বাঁধছেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা।  এই পরিবর্তন দেখে দেশের বহু প্রাক্তন ফুটবলারদের মুখে শোনা গিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল এই ফর্মে থাকলে লিগ তালিকার ৩ অথবা ৪ নম্বর জায়গা করে নেওয়া কার্যত সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু কোন জাদু কাঠির ছোঁয়ায় এতটা পরিবর্তন এল কার্যত খাদের কিনারায় চলে যাওয়া এসসি ইস্টবেঙ্গল? 

ফুটবল বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর নতুন বছরে এসসি ইস্টবেঙ্গলের নতুন অবতারের কারণ। এরমধ্যে অন্যতম হল আন্তর্জাতিক ট্রান্সফার উইন্ডো চালু হওয়া। কম সময়ের জন্য চলতি আইএসএলে আগোছালো দল নিয়েই খেলতে নামে গঙ্গা পাড়ের ক্লাবটি। ফলে দ্বিতীয় সারির ফুটবলারদের নিয়েই আইএসএলের মতো কঠিন টুর্নামেন্টে খেলতে হচ্ছিল রবি ফাওলারদের। কিন্তু আন্তর্জাতিক ট্রান্সফার উইন্ডো চালু হতেই দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেন ফাওলার। নতুন দুই ডিফেন্ডার অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় ও রাজু গায়েকওয়াডকে দলে নিয়ে আসেন ক্লাব কর্তারা। ফলে সাত ম্যাচে ১৩ গোল খাওয়া লাল-হলুদ ডিফেন্স অক্সিজেন পায়। ফলে শেষ তিন ম্যাচে মাত্র দুই গোল হজম করেছে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স। আর এই ভরসায় আক্রমণেও ঝাঁঝ বাড়াতে পারছে মিডফিল্ড ও ফরোয়ার্ডরা। এরসঙ্গে আরও একটি কথা না বললেও নয়, সেটা হল দেবজিজিৎ মজুমদারের হাত। শেষ কয়েকটি ম্যাচে তিনি কার্যত দুর্ভেদ্য হয়ে উঠেছেন তিন কাঠির তলায় দাঁড়িয়ে। প্রাক্তন ফুটবলাররা তো দেবজিতের নাম সেভ-জিৎ দিয়ে ফেলেছেন। 

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন ইস্টবেঙ্গলের বিদেশী ফুটবলাররা ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরেছেন। ডিফেন্সে ড্যানি ফক্স এবং স্কট নেভিলের মধ্যে বোঝাপড়া যেমন বেড়েছে তেমনই মাঝমাঠে আক্রমণ তৈরি করছেন জ্যাঁ মাঘোমা এবং মাঠি স্টেইনম্যান। ফলে আপফ্রন্টে পিলকিংটন এবং জেজে বা রফিক কিছুটা খোলামনে খেলতে পারেছেন। ফলে গোলের সুযোগও তৈরি হচ্ছে প্রচুর। অন্যদিকে নারায়ন দাস এবং অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় দুই উইং দিয়ে উঠে বিপক্ষের ডি বক্সে ক্রমাগত ক্রশ বাড়িয়ে ত্রাহি ত্রাহি রব তুলছেন বিপক্ষের ডিফেন্সে। শেষ ফ্যাক্টরটি হল ব্রাইট এনোবাখর। বাইশ বছরের এই নাইজেরীয় স্ট্রাইকার দলে এসেই সকলের নয়নের মনি হয়ে উঠেছেন। নিজে গোল করছেন ও অপরকে গোল করার রাস্তা তৈরি করে দিচ্ছেন। তাঁর ড্রিবল, বল কন্ট্রোল, উইথ দ্য বল-অফ দ্য বল দৌঁড় মন কেঁড়ে নিচ্ছে ফুটবল প্রেমী মানুষের। ফলে তাঁকে নিয়ে বেশ চিন্তিত আইএসএলের বাকি দলের কোচরাও। অনেকে বলছেন ব্রাইটের অন্তর্ভূক্তিই পাল্টে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। এখন দেখার লাল হলুদের খেলা আরও উন্নত করতে পারেন কিনা লিভারপুল কিংবদন্তী। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post