আমফানের ক্ষত শুকোনোর আগেই দক্ষিণবঙ্গে নিম্নচাপের চোখ রাঙানি শুরু হয়েছে। আকাশ কালো করে বজ্র-বিদ্যুৎ সহ ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে মাঝেমধ্যেই। এর সঙ্গে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে চলছে লকডাউন। এই আবহেই বৃহস্পতিবার জামাইষষ্ঠী পালিত হচ্ছে রাজ্যে। যদিও লকডাউনে গণপরিবহণ প্রায় বন্ধ। তাই দূরে থাকা মেয়ে-জামাই এবার আর আসতে পারছেন না। ফলে শ্বাশুড়িদের মন খারাপ। তবে কিছুটা কাছে থাকা মেয়ে-জামাইকে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে যথারীতি। তাই এদিন পথে দেখা গেল মিস্টি-আম-লিচু বগলদাবা করে মটরবাইকে চেপেই শ্বশুরবাড়ির পথে চলেছেন জামাইরা। গতকাল থেকেই চালু হয়েছে অটো পরিষেবা। তাই অটো স্ট্যান্ডগুলিতেও এদিন লম্বা লাইন।
বৃষ্টিতে ছাতা হাতেই অটো বা সরকারি বাসের অপেক্ষায় মেয়ে-জামাইরা। কিন্তু লকডাউন ও করোনা সংক্রমণের ভয়ে রাজ্যের জেলায় জেলায় এবার জামাইষষ্ঠীর ঢল অনেকটাই কম। কলকাতার ভবানীপুর, লেক মার্কেট, বউবাজার, মানিকতলা বাজারে এদিন সকাল থেকেই একটু ভিড় ছিল। তবে বিক্রেতাদের কথায়, করোনা ও লকডাউনের জন্য এবছর বাজারে ভিড় অনেকটাই কম। অন্যান্য বছর এই দিনে খরিদ্দার সামলানোই দায় হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এবছর ভিড় নেই বললেই চলে। বাজারে মাছের জোগান কম নয়, কিন্তু কেনার লোকের অভাব চোখে পড়ার মতো। অপরদিকে, জামাই আদর করতে গুটিকয়েক শ্বশুর-শাশুড়ি বাজারে এসেছেন তাঁরাও দাম নিয়ে চিন্তিত। অভিযোগ, মাছের দাম আকাশছোঁয়া। রুই, কাতলা, গলদা চিঙড়ি, পাবদা মাছের দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। মিস্টির দোকানগুলিতেও ভিড় হচ্ছে ইতিউতি। শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে যেমন মেয়ে-জামাইরা আসছেন মিস্টি কিনতে। তেমনই আসছেন শ্বশুর-শাশুড়িরাও। এবার মিস্টির দোকানগুলিতে সুগার-ফ্রি মিস্টির চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলেই জানাচ্ছেন মিস্টি ব্যবসায়ীরা। অনেকেই বলছেন, লকডাউন বা করোনা আতঙ্ক যত না সমস্যা তৈরি করছে, তার চেয়ে বেশি সমস্যা করছে এই অসময়ের নিম্নচাপ। বৃষ্টি ও ঝড়ের দাপটের সঙ্গে দোসর হয়েছে কালবৈশাখী। ফলে যাও জামাইরা আসতেন, ঝড়-বৃষ্টির ভয়ে সেটাও হচ্ছেনা। যদিও রাস্তায় দেখা মিলছে মটরবাইক ও প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করেই জামাইষষ্ঠীর বাজারে নেমেছেন জামাই বাবাজীবনরা।
Post a Comment
Thank You for your important feedback