ঠাকুরপুকুরে আত্মঘাতী বাবা-মা-ছেলে


ঠাকুরপুকুর থানার সত্যনারায়ন পল্লী এলাকায় একই পরিবারের তিনজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। বুধবার সকালেই তিনজনের দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় এলাকায় যথেষ্ঠ চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম গোবিন্দ কর্মকার(৭০), রানু কর্মকার (৬৫) এবং তাঁদের প্রতিবন্দী ছেলে দেবাশিস কর্মকার (৪৫)। এই বৃদ্ধ দম্পতির ছেলে দেবশিস জন্ম থেকেই পঙ্গু। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার এই পরিবারের তিনজনই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। প্রতিবেশীরাই খবর দেয় পুলিশে। অভিযোগ, তাঁদের পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে নিয়ে গেলেও রাতের দিকে পুলিশই তিনজনকে ফের বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে যায়। প্রতিবেশীদের দাবি, এই ঘটনায় গোবিন্দবাবু মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। বুধবার সকালে তাঁর ঘর থেকে কোনও সাড়াশব্দ না পাওয়ায় প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। তখনই তিনজনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান তাঁরা। খবর দেওয়া হয় ঠাকুরপুকুর থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘরের মেঝেতে চক দিয়ে একটি সুইসাইড নোট লেখা ছিল। পুলিশ দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে দেয়। তবে ঠিক কী কারণে তাঁদের মৃত্যু হল সেটা জানতে তদন্ত শুরু করেছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে মৃতদেহ দেখে এবং পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ থেকে মনে করা হচ্ছে বিষ খেয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনজন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে তীব্র আর্থিক অনটনের জন্যই এই পরিবার আত্মঘাতী হয়েছেন। কারণ দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক সঙ্কটে ভুগছিলেন গোবিন্দবাবু। তাঁর স্ত্রী রুনু পক্ষাঘাতগ্রস্ত ছিলেন। ছেলে দেবাশিসও জন্ম থেকে পঙ্গু। জমানো টাকাই একমাত্র আর্থিক সংস্থান ছিল তাঁদের। সম্প্রতি রাণুদেবীও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর চিকিতসার জন্য প্রচুর টাকাও খরচ হয়ে যায়। ফলে এই লকডাউনের মধ্যে আর্থিক সমস্যা প্রকট হয় কর্মকার পরিবারের। এই যন্ত্রনা থেকেই হয়তো পুরো পরিবার বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post