‘লড়তে হবে একসাথে’, কিন্তু লড়বেটা কে?

প্রসুন গুপ্ত

বাংলাj কমিউনিস্টদের বহু পুরাতন শ্লোগান হল ‘লড়াই লড়াই চাই…… লড়তে হবে একসাথে’। গতকাল প্রয়াত সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবতীর স্মরণে বর্ধমানে ফের একবার এই বার্তাই দিলেন প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, লড়বেটা কে? অথবা সাথেই বা কে আছে? ৩৪ বছর শাসন করার পর আজ প্রায় দশ বছর তাঁরা ক্ষমতার বাইরে। শুধু তাই নয় প্রতিনিয়ত রক্তক্ষরণের মতো তাঁদের দল ভেঙেছে। ১৯৭৭ সালে বামেদের ভোট ছিল ৫৪ শতাংশ, আজ তাঁদের ভোট কমে মাত্র ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাম ঐক্যে আঘাত দিয়ে একদল যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। কেউ কেউ যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। বামেদের ভোটও ভাগ হয়েছে।

বিগত কয়েকটি নির্বাচনে তাঁদের ভোট গিয়েছে বিজেপিতে। বিগত লোকসভা নির্বাচনে একটিও আসন জোটেনি বাংলায়। দলে সে অর্থে কোনও জনপ্রিয় যুব মুখ নেই। থাকার মধ্যে ছিল ঋতব্রত বন্ধোপাধ্যায় ও শতরূপ ঘোষ। বর্তমানে ঋতব্রত সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত এবং শতরূপকে বেশিরবাগ সময় পাওয়া যায় টিভির পর্দায়। এমনটাই অভিযোগ দলীয় কর্মীদের। আরও করুণ অবস্থা বাম শরিক সিপিআই, আরএসপি, ফরোয়ার্ড ব্লকের। তবে সংগঠন দেখবে কে? নতুন প্রজন্মের কোনও উৎসাহ নেই বাম রাজনীতিতে। তাই স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে “সাথ” দেবে কে বা কারা? বর্তমানে কংগ্রেস “হাত” বাড়িয়েছে তাদের দিকে। যদিও এই রাজ্যে কংগ্রেসের ভোট শতাংশের হিসাবে আরও কম।

বাম ক্ষমতার শেষ বছরে ওই দলে যারা এসেছিলেন তাঁরা যে সুবিধা নিতেই এসেছিলেন এমনটাই মনে করে পুরোনো কমরেডরা। আজ ওই তাঁরাই ক্ষমতার লোভে যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে। যদিও মডেল ত্রিপুরা একটু অন্য কথা বলে, তাঁদের লাইনে বাম কমিউনিস্টদের স্থান নেই। কাজেই বেরিয়ে যাওয়া নব্য বামেরা আশাহত হয়ে রামের হাত ছেড়ে দলে ফিরবে এই আশায় বসে শীর্ষ নেতারা। কিন্তু তখন বড্ডো দেরি হয়ে যাবে না তো? এটাই প্রশ্নের উত্তর মিলবে ২০২১-এর ভোটে।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post