প্রতিটি পুজো মণ্ডপ নো-এন্ট্রি জোন, রায় হাইকোর্টের

 

রাজ্যের সমস্ত পুজো মণ্ডপই দর্শক শূন্য রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অর্থাৎ প্রতিটি পুজো মণ্ডপের সামনেই ব্যারিকেড করে ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড ঝুলিয়ে দিতে হবে প্রশাসনকে। সোমবার করোনা মহামারীর মধ্যে পুজোর অনুমোদন দেওয়া নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলায় এমনই রায় দিলেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। প্রয়োজনে সাধারণ দর্শক ভার্চুয়াল পুজো দেখবেন। পুজোমণ্ডপের বাইরে থাকবে নো-এন্ট্রি বোর্ড। মণ্ডপে একসঙ্গে ১৫ থেকে ২৫ জনের বেশি প্রবেশ নয়। তবে তাঁরা শুধুমাত্র পুজো উদ্যোক্তাই। পাশাপাশি রায়ে এটাও বলা হয়েছে, রাস্তায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা অভিযান চালাতে হবে প্রশাসনকে। সূত্রের খবর, এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে পারে রাজ্য সরকার।


উল্লেখ্য, করোনা অতিমারীর মধ্যে এবারের দুর্গাপুজো বন্ধের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। এর আগে মামলার শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ মাত্র ৩০ হাজার পুলিশ দিয়ে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় সামলানো কার্যত অসম্ভব। তাই প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে আদালতের মত, সেক্ষেত্রে পুজো মণ্ডপগুলিকে কনটেনমেন্ট জোন (Containment Zone) ঘোষণা করা হোক। এর পাশাপাশি মণ্ডপে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক। অথবা একসঙ্গে ২০ জনকে প্রবেশাধিকার দেওয়া যেতে পারে। হাইকোর্টের মত, প্রত্যেক পুজোই নো এন্ট্রি জোন হোক। ছোট পুজোর ক্ষেত্রে মণ্ডপের ৫ মিটার পর্যন্ত এবং বড় পুজোর ক্ষেত্রে ১০ মিটার নো এন্ট্রি ঘোষণা করা যেতে পারে। এই দূরত্ব থেকে দর্শকরা প্রতিমা দর্শন করে চলে যাবেন। তবে কোনওভাবেই ভিড় করা যাবে না। আর মণ্ডপের ভিতর উদ্যোক্তাদের মধ্যে নির্দিষ্ট ২০ জন প্রবেশ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের নামের তালিকা টাঙিয়ে দিতে হবে মণ্ডপের বাইরে। কোনটা ছোট পুজো আর কোনটা বড় সেটা ঠিক করবে স্থানীয় থানা।

এর আগে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এবং মুখ্যসচিবের কাছ থেকে পুজোর দুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চেয়ে পাঠিয়েছিল হাইকোর্ট। যদিও বিচারপতি মৌখিকভাবেই পুজোয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিড় সামলানোর ব্লুপ্রিন্ট চেয়েছিলেন। জানতে চাওয়া হয়েছিল, পুজোর দিনগুলি কীভাবে করোনাবিধি মেনে চলা হবে, কীভাবেই বা ভিড় সামলানো হবে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা পরেনি রাজ্যের তরফে। ফলে হতাশা প্রকাশ করেন বিচারপতিরা। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ‘রাজ্যের উচিত ছিল আরও সচেতন হওয়া। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক’। তিনি এদিন বলেন, ‘‌কাগজে বা অন্য সংবাদমাধ্যমে এখনই পুজোর ভিড়ের যা ছবি দেখছি তা খুবই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রীতিমতো ভয় করছে দেখে’। যদিও এখনও কোনও রায় দেয়নি হাইকোর্ট। ফলে পুজো সংক্রান্ত এই গুরুত্বপূর্ণ মামলায় কী সিদ্ধান্ত নেয় হাইকোর্ট তার দিকেই তাঁকিয়ে বঙ্গবাসী।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post