২০২০ ভারত কেন গোটা দুনিয়ার কাছে অর্থনৈতিক ধসের বছর। দেশে অর্থনৈতিক সঙ্কোচন হয়েছে ২৩.৯ শতাংশ, যা অভূতপূর্ব। দেশ চলে গিয়েছে গিয়েছে আর্থিক মন্দায়। আগে খেরেই কমছিল ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার। করোনো এসে তা পৌঁছে দিয়েছে তলানিতে। নেমে গিয়েছে জিডিপি। লকডাউনে স্তব্ধ ছিল সব বাণিজ্যিক কাজকর্ম। রুটিরুজি হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে কারখানা, কারবার।
এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ভারতের অর্থনীতি ব্রিটেনের ২১ শতাংশের থেকেও নীচে চলে যায়। নয়ের দশকে দেশে মুক্ত অর্থনীতি শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭ শতাংশ ছিল জিডিপির বৃদ্ধি। এবার তা উল্টে যাবে মাইনাস ৭ শতাংশে। একমাত্র কৃষি ছাড়া সব ক্ষেত্রেই ভয়ঙ্কর ধাক্কা খেয়েছে অর্থনীতি। সবথেকে ক্ষতি নির্মাণ শিল্পের, মাইনাস ৫০ শতাংশ। বেচাকেনা, হোটেল ও অন্য পরিষেবা কমেছে ৪৭ শতাংশ, ম্যানুফ্যাকচারিং কমেছে মাইনাস ৩৯ শতাংশ, খনিতে মাইনাস ২৩ শতাংশ। এইসব ক্ষেত্রকেই সবথেকে বেশি নতুন নিয়োগ হয়। ফলে চোট খেয়েছে কর্মসংস্থান। বেড়েছে কর্মহীনতা।
পরপর দুবার জিডিপি সঙ্কুচিত হওয়ায় ভারত চলে গিয়েছে মন্দায়। আর্থিক বৃদ্ধি এখন খানিকটা সামলে হয়েছে মাইনাস ৭ শতাংশ। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে কিছুটা চাঙা হয়েছে কৃষি, ম্যানুফ্যাকচারিং আর পরিষেবা। অন্য ক্ষেত্রেও পতনের হার কমছে। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে জিডিপি কমেছে মাইনাস ১৫.৭ শতাংশে, গতবছর তা ছিল ৪.৮ শতাংশ।
এই মন্দার সবথেকে বড় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। লকডাউনে কাজ হারিয়ে ভিন রাজ্যে আটকে পড়া হাজার হাজার শ্রমিক পায়ে হেঁটে বহু পথ অতিক্রম করে পৌঁছেছেন নিজেদের গ্রামে। সরকারের তরফে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ত্রাণ প্রকল্প ঘোষণা করা হয়। তাদের ঝণের গ্যারান্টি দিয়েছে সরকার।
এরই সূত্র ধরে এসেছে আত্মনির্ভর ভারতের স্লোগান। নানা ধাপের আত্মনির্ভর প্যাকেজও ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। চিনা পণ্যের ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে যাতে দেশেই উৎপাদন হতে পারে সেজন্য নানারকম উৎসাহ দিচ্ছে সরকার। টাকা গরিবদের কাছে না দিয়ে তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ওপরই বেশি জোর মোদি সরকারের।
إرسال تعليق
Thank You for your important feedback