জেতা কেন্দ্র বদলেছিলেন জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেবও

শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নন, নিজেদের জেতা কেন্দ্র থেকে সরে গিয়েছিলেন জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও। তার নানা কারণ ছিল। তার একটা নিশ্চিতভাবেই জয়ের সম্ভাবনা কম থাকা। ১৯৫১ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচনের পর থেকেই বরানগর ছিল জ্যোতি বসুর নিশ্চিত আসন। পরপর পাঁচবার তিনি জিতেছিলেন কলকাতার উত্তরে ২৪ পরগনার এই কেন্দ্র থেকেই। ১৯৫১, ১৯৫৭, ১৯৬২, ১৯৬৭, ১৯৭১ সালে জ্যোতিবাবু এই কেন্দ্র থেকেই জিতে দুবার উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। ছেদ পড়েছে ১৯৭২ সালে। সেবার তিনি হেরে গিয়েছিলেন সেসময়ের কংগ্রেসের জোটসঙ্গী সিপিআইয়ের শিবপ্রসাদ ভট্টাচার্যের কাছে। সেই নির্বাচনে ব্যাপক রিগিং হয়েছিল, এই অভিযোগে ভোটের মাঝপথেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন জ্যোতিবাবু।

তারপর তিনি চলে যান দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়ায়। ১৯৭৭ সালে এই কেন্দ্র থেকে জিতেই তিনি রেকর্ড সময়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। ১৯৮২, ১৯৮৭, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে তিনি জয়ী হয়েছিলেন এই কেন্দ্র থেকেই। তারপর ২০০১ সাল থেকে সাতগাছিয়া চলে যায় তৃণমূলের সোনালি গুহর হাতে। সিপিএম আর জিততে পারেনি এই কেন্দ্র থেকে। 

জ্যোতিবাবুর পরের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ১৯৭৭ সালে প্রথম বামফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন উত্তর কলকাতার কাশীপুর কেন্দ্র থেকে জিতে। কিন্তু তার পরের ভোটে ১৯৮২ সালে তিনি কাশীপুরেই হেরে যান কংগ্রেসের প্রফুল্লকান্তি ঘোষের কাছে। এরপর আর কাশীপুরে দাঁড়ানোর ঝুঁকি নেননি বুদ্ধদেব। তিনি সরে আসেন দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরে। সেখানে বুদ্ধদেববাবু জেতেন ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৬ সালে। ২০১১ সালে যাদবপুরেই তিনি হেরে যান তাঁরই সময়কার মুখ্যসচিব মণীশ গুপ্তের কাছে। তারপর অবশ্য তৃণমূল আসনটি ধরে রাখতে পারেনি। জেতেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী। এবার নিজের ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে সরে আসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে তাঁর জেতা ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের জয় হয়েছিল বিজেপির থেকে মাত্রই ৩,১৬৮ ভোটের ফারাকে। এমনকী, নিজের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডেও তৃণমূল হেরেছিল ৪৯৬ ভোটে। 



Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post