বামেদের বাংলা বনধে দফায় দফায় ট্রেন ও রাস্তা অবরোধ, তবে প্রভাব কম

বামেদের ডাকা ১২ ঘণ্টার বনধে সকাল থেকেই রাজ্যের সর্বত্রই যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। খুলেছে দোকানপাট, বাজার। কিন্তু বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অবরোধ, মিছিলে নাকাল হতে হল অফিস যাত্রীদের। বাম কর্মী সমর্থকরা রীতিমতো পতাকা হাতে রাস্তায় রাস্তায় অবরোধ শুরু করেন। এমনকি শিয়ালদা উত্তর, দক্ষিণ এবং মেন শাখায় বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন অবরোধও করেন। সাতসকালেই অবরোধ হয়েছিল যাদবপুর স্টেশনে। বেলার দিকে বনগাঁ শাখায় হাসনাবাদ, বসিরহাটে ট্রেন অবরোধ হয়। শিয়ালদা মেন শাখায় কাঁচড়াপাড়া, সোদপুর স্টেশনেও অবরোধ করে বাম সমর্থকরা। হাওড়া শাখায় ডোমজুড় স্টেশনে রেল অবরোধ হয়। ফলে দীর্ঘক্ষণ আটকে যায় লোকাল ট্রেন। সমস্যায় পড়েন অফিসযাত্রীরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেও জাতীয় এবং রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বাম সমর্থকরা। ফলে নিত্যযাত্রীদের সমস্যা হলেও বনধের প্রভাব সেভাবে পড়েনি রাজ্যে। 

 বাম ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযানে পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদে এই হরতাল ডাকা হয়েছে। সমর্থন করছে কংগ্রেস, আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট। কলকাতায় স্বাভাবিভাবেই চলছে বেসরকারি বাস, ট্যাক্সি, অটো,চলছে। কিছুটা অবরোধে নাকাল হলেও অন্যদিনের মতোই ভিড় হাওড়া, শিয়ালদা স্টেশনে।

জেলাগুলিতে কোথাও কোথাও মিছিল ও অবরোধের খবর এলেও জীবনযাত্রা অন্যদিনের মতোই স্বাভাবিক। সকালের দিকে আসানসোলের সরকারি বাস আটকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। বনধের সমর্থনে কোচবিহারে শহরের বাসস্ট্যান্ড মোড়ে বাস আটকাতে গিয়ে পুলিশের সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি বাধে বনধ সমর্থকদের। পরে পুলিশ তাদের আটক করে নিয়ে যায়। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানার মেচগ্রামে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ হয়। পূর্ব পাঁশকুড়ার বিধায়ক শেখ ইব্রাহিম আলির নেতৃত্বে মুম্বই রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছে। ধূপগুড়িতে রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। বারাসাত চাঁপাডালি মোড়ে পথ অবরোধ করে ফরওয়ার্ড ব্লক। ক্যানিংয়ে রাস্তা অবরোধ করেন বাম ও কংগ্রেস সমর্থকরা। 

বনধে মোকাবিলায় সব জায়গাতেই রয়েছে যথেষ্ট পুলিশ। একনও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আসেনি। ধর্মঘট উপেক্ষা করেই সকাল থেকে ভিড় উপচে পড়ে বহরমপুরের নতুনবাজারে। রামপুরহাটে সকাল সকাল বাম কর্মীরা রাস্তায় নেমেছে। সকালে তারা বেসরকারি বাস বন্ধ করার জন্য বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভ দেখায়। বাঁকুড়া জেলায় বেসরকারি বাস পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধ। বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দোকানদানি বন্ধ। ভোগান্তিতে সাধারণ যাত্রীরা। ট্রেন বাস চলছে। তবে বেসরকারী মিনি বাসের সংখ্যা কম। মালদায় যান চলাচল পুরো স্বাভাবিক। বীরভূমের সিউড়িতে যাতায়াত করছে একাধিক রুটের বিভিন্ন সরকারি বাস। শহরে খোলা রয়েছে একাধিক দোকান, সকাল থেকে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন সাধারণ মানুষ। যদিও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ বেসরকারি বাস ।

সাধারণ মানুষের চলাচল অব্যাহত রঘুনাথগঞ্জ বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায়। যদিওবেশিরভাগ বেসরকারি বাস চলছে না। নদিয়ার রানাঘাটেও তেমন সাড়া পড়েনি। ট্রেনযাত্রীদের সংখ্যাও অন্যান্য আর দিনের মতোই স্বাভাবিক।    অন্যদিকে, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক। দক্ষিণ ২৪পরগণার বিস্তীর্ণ এলাকায় জনজীবন স্বাভাবিক। প্রতিদিনের মতো বারুইপুর কাছারিবাজারে পাইকারি ও খুচরো বিক্রেতাদের যথেষ্ট ভিড়। বাস, ট্রেন ও অন্যান্য যানবাহন স্বাভাবিক নিয়মে চলছে। মেদিনীপুর হেড পোস্ট অফিসের গেট ঘেরাও করে স্লোগান দেন বামকর্মীদের। শুক্রবারই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খুলতে চলেছে রাজ্যে। কিন্তু স্কুলে গেলে ছাত্রছাত্রীদের বাধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন এসএফআইয়ের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। 



Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post