হলদিয়ার জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

হলদিয়ায় পৌছলেন প্রধানমন্ত্রী

হলদিয়ায় পৌছলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবার দুটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছেন মোদি। দুপুর তিনটের কিছু পরে তাঁর বিমান নামে দমদম বিমানবন্দরে। আজ হলদিয়ায় একাধিক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি হলদিয়া হেলিপ্যাড মাঠে বিজেপির এক সভাতেও যোগ দেবেন তিনি। হলদিয়ায় ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের দ্বিতীয় 'ক্যাটালিটিক আইসো-ডিওয়াক্সিং' ইউনিটের শিলান্যাস করবেন তিনি৷ এর আনুমানিক খরচ ১ হাজার ১৯ কোটি টাকা৷ কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা প্রায় ২ হাজার ২০০ বলে জানা যাচ্ছে৷ এছাড়াও মোদি বিপিসিএলের এলপিজি ইমপোর্ট টার্মিনালেরও' উদ্বোধন করবেন। আনুমানিক খরচ ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ৷ উদ্বোধন হবে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে চার লেনের উড়ালপুল। এছাড়াও ঝাড়খণ্ড থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত পাইপলাইন 'প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা গ্যাস' প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন তিনি। ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পে রাজ্যে এই প্রথম গেইলের প্রকল্প আসছে।

পশ্চিমবঙ্গ শিল্পে পিছিয়ে পড়ছে কেন, প্রশ্ন মোদির
আমার প্রিয় মা, বোন ও ভাই ও বন্ধুরা -- বাংলা. এই সম্বোধন কের ভাষণ শুরু করেন মোদি। বলেন, মেদিনীপুর ক্ষুদিরামের মাটি, তাম্রলিপ্ত সরকার তৈরি হয়েছিল এই মাটিতে। বিদ্যাসাগর বর্ণপরিচয় দিয়েছেন। সতীশ সামন্তের হাতে হলদিয়া বন্দর তৈরি হয়েছে। আগেরবার সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে এসেছিলাম। এবার হলদিয়ায় প্রায় পাঁচহাজার কোটির প্রকল্প উদ্বোধনে এলাম। ফ্লাইওভার হবে। উন্নিত হবে শিল্পের। নাগরিকদের সুবিধা হবে। ধোবি-দুর্গাপুর গ্যাস প্রকল্পের ফলে সুবিধা হবে দুর্গাপুর সার কারখানারও।
কেন পশ্চিমবঙ্গ আগে এগিয়ে থেকেও পিছিয়ে পড়ল, প্রশ্ন মোদির। হলদিয়া পেট্রোকেমিকাল, ফার্টিলাইজার পিছিয়ে পড়েছে। গত ১০ বছরে রাজ্যের অধোগতি চরমে। স্বাধীনতার পর রাজ্য উন্নতির বদলে কংগ্রেস দুর্নীতি করেছে। বাম আমলে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে হিংসা। মমতা পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন। লোকে ভরসা করেছিল। দশবছরে কেবল নির্মমতা হয়েছে। এটা পরিবর্তন নয়, বামেদের পুনরুজ্জীবন হয়েছে। হিংসার পুনরুজ্জীবন হয়েছে। অধিকারের কথা বললেই মমতা রাগ করে। ভারতমাতা কি জয় বললেও রেগে যান। দেশবিরোধী কথা বললেও তাঁর কিছু আসে যায় না।

তৃণমূল-বাম-কংগ্রেস পর্দার পিছনে ম্যাচ ফিক্সিং করছেঃ মোদি
বাংলায় আমাদের লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কিন্তু এদের বন্ধুদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। বাম ও কংগ্রেস ও তৃণমূল মিলে পর্দার পিছনে ম্যাচ ফিক্সিংস করছে। মোদি বলেন, দিল্লিতে একঘরে এই তিন দলের নেতারা একসঙ্গে কথা বলে। বাংলায় বাম ও তৃণমূলের লড়াই শুধু দেখানোর। পিসি-ভাইপোকে বাংলা থেকে সরাবে বাংলার মানুষ সরাবে। অনেক ফাউল হয়েছে। লাল কার্ড দেখাবেন মানুষ। বাংলার উন্নয়ন, সংস্কৃতি নিয়ে যারা চিন্তা করছে তারা সবাই বিজেপিতে এসেছে। বাংলার নতুন প্রশাসন ভালো কাজ করবে। ত্রিপুরার মতো ডবল ইঞ্জিনের সরকার ভালো কাজ করছে বলেও তিনি দাবি করেন।
মোদি আরও বলেন, এই নির্বাচনের পরে প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকেই কৃষক দেশের বাকি কৃষকদের মতো এরাজ্যে কৃষকরা সুবিধা পাবেন। আয়ুষ্মান ভারতে যোজনায় গোটা দেশের হাসপাতালে ৫ লাখ টাকার সুবিধা পাবেন। তাঁর অভিযোগ, ২৫ লাখ কৃষক সম্মাননিধির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তৃণমূল সরকার মাত্র ৬ হাজার কৃষকের নাম খুঁজে পেয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই ৬ হাজার কৃষককে টাকাও পাঠাতে পারছে না। তৃণমূল সরকার এই কৃষকদের ব্যাঙ্কের তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দেয়নি। বাংলায় ৪ লাখ জনধন অ্যাকাউন্ট খোলায় টাকা পৌঁছানো গিয়েছে। উজ্জ্বলা যোজনার গরিবদের গরে এলপিজি গ্যাস পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পও চালু হয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ভারতকে বদনাম করার জন্য বিভিন্ন বিদেশি শক্তি সক্রিয়। ভারতকে কীভাবে বদনাম করা হবে তা নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ভারতকে বদনাম করার জন্য চা শিল্পের বদনাম করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারীদের বলে দিচ্ছি, গোটা দেশ এর জবাব দেবে। মা মাটি মানুষের কথা বলা দলের আজ ভারত মায়ের পক্ষে কথা বলার সাহস নেই। কারণ, এই লোকেরা রাজনীতিকে অপরাধীকরণ করেছে। দুর্নীতি করেছে। তৃণমূলকে জিজ্ঞাসা করছি, নন্দীগ্রাম যারা গুলি চালিয়েছে তাদের দলে কেন নিয়েছেন। এই সরকার আমফানের সময়ে দুর্নীতি করেছে। এত বড় ঝড়ের পরে কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় কী করেছে, সেটা বাংলার মানুষ জানে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে কোর্টও এর উপর মন্তব্য করেছে।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post