বন সহায়ক পদে দুর্নীতি নিয়ে রাজীবকে তোপ মমতার, পাল্টা রাজীবের

সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদেও ইস্তফা দিয়ে এসেছিলেন তিনি, তখন তাঁর হাতে ধরা ছিল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। কিন্তু এর কয়েকদিনের মধ্যেই তৃণমূল নেত্রী তীব্র আক্রমণ করলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেই। নাম না নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতিবাজ বলে রাজীবের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন আলিপুরদুয়ারের কর্মিসভা থেকে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ছেলেটা ছিল। সে এখন আমাদের সঙ্গে আর নেই। আমার কাছে অভিযোগ এসেছে বন সহায়ক পদ নিয়ে কারচুপি হয়েছে। আমরা সব তদন্ত করে দেখছি’। তিনি আরও বলেন, বিজেপিতে গেছে তো। পেছনে ল্যাজে যখন আগুন দিয়ে লঙ্কাকাণ্ড হবে তখন বুঝবে। ল্যাজপোড়া বিজেপি। চুরি করে বিজেপিতে গেছে। কালো চোর বিজেপিতে গেছে সাদা হতে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে ওয়াশিং মেশিন বলেও কটাক্ষ করেন এদিন। 


মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের ঘন্টাখানেকের মধ্যেই পাল্টা জবাব দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিকেলেই হুগলির গুড়াপে এক জনসভায় তাঁর বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই পাল্টা তোপ দাগলেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, উনি (মুখ্যমন্ত্রী) ভয় পেয়েছেন, এত ভয় পেয়েছেন যে গলায় কাঁপা কাঁপা স্বর। এত ভয় কিসের? যদি মনে করেন আমরা সমুদ্রের দু ঘটি জল তাহলে আমাদের নিয়ে এত চিন্তা করার কিছু নেই। এত কুরুচিকর, ব্যক্তিগত আক্রমণের কোনও দরকার নেই। করছেন মানেই আপনি ভয় পেয়ে গেছেন। আপনার পায়ের তলা থেকে জমি আলগা হয়ে গিয়েছে। 

এদিন তাঁর বিরুদ্ধে করা মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের জবাবও দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বন সহায়ক পদে চাকরির নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে পরোক্ষে রাজীবকেই তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন পাল্টা জবাবে রাজীব বলেন, আমি নাম নিয়েই বলছি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, এই বন সহায়কের নিয়োগ আমি নিরপেক্ষভাবে বোর্ডের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। রাজীব আরও বলেন, ৮ অক্টোবর সকাল ১০টার সময় আমি আপনাকে মেসেজ করেছিলাম, বীরভূমের একজন বড় নেতা আমাকে ধমকি দিয়ে বলছে যে বন সহায়কের সব চাকরি তাঁকে দিতে হবে। তাঁর বদলে আপনি বলেছিলেন, সব না পারলেও সব জেলায় তৃণমূল নেতাদের কিছু কিছু কোটা তুমি দিয়ে দাও। আমি এতদিন মুখ খুলিনি, আজ আপনার কথার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ খুলতে বাধ্য হলাম। তিনি আরও দাবি করেন, এই বিষয়ে তাঁর কাছে সব মেসেজ এবং কথোপকথনের রেকর্ড আছে। তিনি এদিন জোরের সঙ্গেই বলেন, আমার কাছে সব কপি রয়েছে কোথায় কোথায় কোন নেতারা সুপারিশ দিয়েছিল বন সহায়ক পদে নিয়োগের জন্য। এমনকি কালীঘাট থেকেও যা যা সুপারিশ এসেছিল তারও কপি সযত্নে রাখা আছে আমার কাছে। আমি নিরপেক্ষ ছিলাম বলেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বোর্ডের হাতে দিতে চেয়েছিলাম।

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post