বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে ৭০টির বেশি মামলা প্রত্যাহার করছে নবান্ন

শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর পুরস্কার পেলেন বিমল গুরুং। শনিবারই নবান্ন থেকে দার্জিলিং পুলিশের কাছে এক নির্দেশিকা পৌঁছেছে। তাতে বলা হয়েছে, বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে যে সমস্ত মামলা রয়েছে সেগুলি প্রত্যাহার করে নিতে। উল্লেখ্য, তৎকালীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুংয়ের নামে ৭০টির বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। সূত্রের খবর, তিন জেলার নিম্ন আদালতগুলিতে থাকা ৭০ টি মামলা শীঘ্রই ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

 তবে জানা যাচ্ছে, ইউএপিএ ধারা এবং খুনের কয়েকটি মামলা প্রত্যাহার করেনি রাজ্য সরকার। যদিও কোন কোন মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে সেগুলি সম্পর্কে স্পষ্ট জানা যায়নি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছিল গত লোকসভা ভোটে। এবার সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে আরও বেশি আসন ছিনিয়ে নিতে মরিয়া শাসক শিবির। তাই বিমল গুরুংই এখন ভরসা তৃণমূলের। তাঁর জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে পাহাড় ও সমতলের বেশ কয়েকটি আসন জিততে চায় ঘাসফুল শিবির।

 উল্লেখ্য, বিমল গুরুং আত্মগোপনে থাকাকালীন বিনয় তামাং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দায়িত্ব নেয়। কিন্তু তিনি সেভাবে দাগ কাটতে পারেননি। ফলে ফের বিমল গুরুংকে ফিরিয়ে আনতে হল শাসকদলকে। এবার তাঁর বিরুদ্ধে থাকা ৭০টির বেশি মামলা প্রত্যাহার করে তাঁকে আরও সুযোগ করে দেওয়া হল প্রচারের জন্য। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী নেতারা অবশ্য তুলোধনা করতে ছাড়েনি। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘ফের প্রমান হল এই রাজ্যে সংবিধান চলে না। এই রাজ্যে মমতা-বিধান চলে। উনি কোনও আইন-কানুনের ধার ধারেন না’। 

বাম পরিষদীয় নেতা তথা বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘যিনি পুলিশ অফিসার খুনে অভিযুক্ত, যে মানুষকে বাংলা ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। পুলিশ যাকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেরাচ্ছিল, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা কখনও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়! যেহেতু বিমল গুরুঙ ওনাকে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চেয়েছে, মা বলে ডেকেছে, তাই এখন সাত খুন মাফ’। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বেই পাহাড়ে আগুন জ্বলে উঠেছিল। পুলিশের ওপর হামলা থেকে শুরু করে সরকারি ভবনে আগুন, ভাঙচুর কিছুই বাদ যায়নি। সেসময় এক সংঘর্ষে রাজ্য পুলিশের এসআই অভিতাভ মালিকের মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন বিমল গুরুং। তবে মাসখানেক আগে আচমকাই কলকাতায় উদয় হন পুলিশের খাতায় ‘ফেরার’ বিমল গুরুং।
 

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post