শিকেয় স্বাস্থ্যবিধি, 'আরও দামি' আমজনতার করোনা-হাতিয়ার


দেশের সঙ্গে এরাজ্যেও প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এরইমধ্যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। বাকি চার রাজ্যে নির্বাচন মিটলেও বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গে শেষ দফার ভোটগ্রহণ। করোনার বাড়বাড়ন্তে অবশ্য ছেদ পড়েনি রাজনৈতিক নেতাদের ভোট প্রচারে।  অবস্থা বেসামাল বুঝে চতুর্থ দফার ভোটের পর প্রচারে লাগাম টানে কমিশন। করোনা আবহে ভোট প্রক্রিয়া নিয়ে কখনও মাদ্রাজ হাইকোর্ট, কখনও সুপ্রিম কোর্ট, কখনও কলকাতা হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে।

উল্টোদিকে এই পরিস্থিতিতে জেরবার অবস্থা আমজনতার। একদিকে ‘গণতন্ত্রের উৎসব’, অন্যদিকে করোনার রক্তচক্ষু থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে নিত্যদিনের লড়াই চালিয়ে যাওয়া।  হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাব, ভ্যাকসিনের দাম ও তার অপ্রতুলতা মানুষের উদ্বেগকে বাড়িয়ে দিয়েছে আরও কয়েক গুণ। রোজই নেট দুনিয়া, সোশাল মিডিয়া এবং সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসছে করোনা থেকে বাঁচার নানাবিধ উপায়। শোনা যাচ্ছে, কোভিড প্রোটোকল বা করোনা বিধির মতো শব্দ।  গত বছর থেকেই মাস্ক, ফেস শিল্ড, স্যানিটাইজার জায়গা করে নিয়েছে মানুষের প্রতিদিনকার প্রয়োজনের তালিকায়। অনলাইন বিপণির হাত ধরে ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে পাল্স অক্সিমিটার, কেউ কেউ আবার বাড়িতেই রেখেছেন পোর্টেবেল অক্সিজেন ক্যান।  

এবছর নতুন করে করোনার থাবায় সব মিলিয়ে ছবিটা বেশ হতাশ করা। আদৌ কি আমরা সচেতন হয়েছি? নিশ্চিত করে উত্তরটা হবে ‘না’।  পাশাপাশি মানতেই হয়, গত বছর লকডাউন ওঠার পর রাস্তাঘাটে, ট্রেনে-বাসে নিত্যযাত্রীদের যেভাবে করোনা বিধি মানতে বাধ্য করা হয়েছিল, তাও যেন আলগা হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে। অনেকটা বজ্রআটুনি, ফস্কা গেরোর মতো।  লোকাল ট্রেন কিংবা মেট্রোয় ঘোষণাই সার, মানা হচ্ছে না ন্যূনতম সামাজিক দূরত্ব।  উল্টে ট্রেনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা।  


করোনা-যুদ্ধে মাস্ক, ফেস শিল্ড ও স্যানিটাইজারের মতো হাতিয়ার  এখন সাধারণের নাগালে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে মিলছে এসব সামগ্রী। গত বছর একটা সময় পর্যন্ত  মহার্ঘ ছিল এন ৯৫ ও সার্জক্যাল মাস্ক। ভরসা ছিল অনলাইন বিপণি সংস্থা। সে সময় এন ৯৫ মাস্কের দাম ছিল ৩৫০ টাকা।  এখন সার্জিক্যাল ও এন ৯৫ মাস্কের দাম কমলেও, লকডাউনের পর থেকে আমজনতার একটা বিরাট অংশ হাতে তুলে নিয়েছে বাহারি কাপড়ের মাস্ক। অ্যালকোহল যুক্ত ৫ লিটার স্যানিটাইজার বিকেছে ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায়। অনলাইন বিপণি সংস্থায় যার ন্যূনতম দাম দাঁড়িয়েছে ৬৫০ থাকা ৭০০ টাকা।  শুরুতে যেখানে পাল্স অক্সিমিটারের দাম ছিল ৭৫০ থেকে ১০০০ টাকা। অনলাইন বিপণিতে তা মিলছে ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকায়।  পোর্টেবেল অক্সিজেন ক্যানের অবস্থা তো আরও খারাপ। অনেক অনলাইন বিপণি সংস্থায় মিলছেই না এই সামগ্রী। কোথাও বা মিললে তার দাম বেড়েছে বহুগুণ।  

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post