জলে ডুবল কপিলমুনির আশ্রম, গঙ্গাসাগরে প্লাবিত একের পর এক গ্রাম



কারোর কোলে দুধের শিশু তো কারোর কোলে ছাগল ছানা বা বাছুর। প্রত্যেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে হন্যে। কোথাও হাঁটুর উপর বা কোথাও কোমর সমান জল। ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে জলের স্তর। বাড়িঘর, দোকানপাটে ঢুকে পড়েছে জল। তাই জরুরী কাগজপত্র বোগলদাবা করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ। এই দৃশ্যই দেখা গেল দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তৃর্ণ এলাকায়। যা ভয় ধরাতে বাধ্য সাধারণ মানুষের মনে। বুধবার সকাল ৯টা ১৫ নাগাদ ওডিশার বালাসোরের দক্ষিণে আছড়ে পড়েছে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। যার রেশ এসে পড়েছে বঙ্গের উপকূলীয় এলাকাগুলিতে। মুড়িগঙ্গার এক তীরে সাগরদ্বীপ। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আসার আগেই জলমগ্ন হয়ে পড়ল গঙ্গাসাগরের বিশাল এলাকা। সূত্রের খবর, একাধিক জায়গায় নদীবাধ ভেঙেছে মুড়িগঙ্গার। ঝোড়ো হাওয়া, উত্তাল সমুদ্র এবং মুড়িগঙ্গার জল। যার জেরেই নদীবাঁধের দুর্বল অংশ ভেঙে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে গঙ্গাসাগরের একাধিক এলাকায়। 


 

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা গবাদি পশুগুলির। কোনও রকমে নাক উঁচু করে প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া চেষ্টা। গঙ্গাসাগরের কপিলমুনির আশ্রমে বুধবার সকাল থেকেই বেশ কয়েকজন আশ্রমিক ছিলেন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ল্যান্ডফল করতেই দুর্যোগ বাড়তে থাকে ক্রমশ। কপিলমুনির আশ্রম এবং মন্দির জলায় তলায় যেতে শুরু করে। দ্রুতই আশ্রমিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে বের করে নিয়ে যায় প্রশাসনের উদ্ধারকারীরা। মুড়িগঙ্গা এবং সাগরের জল বাড়তে থাকায় একের পর এক গ্রাম প্লাবিত হতে শুরু করে। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, নদীর বাঁধ ভেঙে যাওযায় জলমগ্ন মুড়িগঙ্গা সিলপাড়া, জলের তলায় ৫০০-৬০০ বাড়ি। 

 

পাশাপাশি গঙ্গাসাগরে নদীবাঁধ ভাঙ্গার ফলে বেশ কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন, জলের তলায় কচুবেড়িয়ার কশতলা, মহিষামারী গ্রাম। অপরদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তী ব্লকের ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েতে গৌড়দাস পাড়া এলাকায় নদী বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে এলাকায়। একই অবস্থা বাসন্তীর চড়াবিদ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতে। এখানে কুমড়োখালি নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে গ্রামের পর গ্রামে। বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ ভেঙেও জল ঢুকে পড়েছে রামপুর গ্রামে। গ্রামবাসীদের সাইক্লোন সেন্টারের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অপরদিকে, ডায়মন্ড হারবারে হুগলী নদীর বাঁধ ভে‌ঙে প্লা‌বিত বিস্তৃর্ণ এলাকা। ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১০-১৪ নম্বর ওয়ার্ড জলের তলায়। শতা‌ধিক প‌রিবার ক্ষতিগ্রস্ত। বাড়িঘর, হো‌টেলের মধ্য ঢু‌কে‌ছে জল, অসহায় মানুষ জন। উদ্ধার কা‌জে নেমেছে পু‌লিশ প্রশাসন। 

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post