বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তৃতীয়বার মসনদে 'বাংলার মেয়ে'


বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে বসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  দল বদল করে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারিকে যোগ্য জবাব দিয়ে নন্দীগ্রামে হারাতে না পারলেও বাংলার জনগন আরও একবার মমতাতেই আস্থা রাখলেন। প্রচারে হেভিওয়েট বিজেপি নেতাদের দাবি, একাধিক বুধ ফেরত সমীক্ষাকে পিছনে ফেলে দিয়ে যাবতীয় জল্পনার অবসান ঘটালো একুশের বিধানসভা নির্বচনের ফলাফল। যদিও ভোটের ফল বলছে, আদৌ কাজে আসেনি বিজেপির সেই কৌশল। 

শুরু থেকেই আত্মবিশ্বসী তৃণমূলের দাবি ছিল, ভোট প্রচারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে এসে মাইন্ড গেম খেলছে বিজেপি। চেষ্টা চলছে ভোট-ময়দানে দলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগানোর। এর আগেই গত বছর ২১ ডিসেম্বর টুইট করে তৃণমূলের ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোর জানান, 'মিডিয়ার প্রচার থাকতেই পারে, তবে বিজেপিকে লড়াই করতে হবে দুই অঙ্কের সীমা পার করার জন্য'। টুইটটি সেভ করে রাখার আবেদন জানিয়ে তিনি আরও দাবি করেন, 'বিজেপি যদি এর চেয়ে সামান্য ভাল ফল করে, তবে আমি এই পদ ছেড়ে দেব'। 

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বঙ্গ রাজনীতিতে একুশের নির্বাচন ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের স্মৃতি উসকে দিয়েছে। সে বছরও নির্বাচনের আগে ভোট ময়দানে জায়গা করে নিয়েছিল প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া।  বাম সরকারের পতন নিশ্চিত বলে মনে করেছিলেন অনেকেই। কেউ মনে করেছিলেন, বামেরা সরকার গঠন করতে পারলেও জয়ের ব্যবধান অনেকটাই কম হবে।  যদিও যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে ২৯৪টি আসনের মধ্যে ২৩৫টি আসনে জয়লাভ করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে সরকার গঠন করে বামেরা। এবারও রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে তৃণমূল সরকারের উল্লয়নের দাবিকে খণ্ডন করে ভোট বৈতরণীর পালে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া জোগাতে দুর্নীতি ইস্যুকেই হাতিয়ার করে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে বিজেপি।  

পাশাপাশি কেন্দ্রের মোদী সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলেছে বলেও মনে করছেন অনেকে। জ্বালানি থেকে রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, সব ইস্যুতেই রাজ্যের আমজনতার একটা বিরাট অংশ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মধ্যবিত্তের রাজনৈতিক ভাবনায় প্রভাব ফেলেছে ব্যাঙ্ক, বিমা, রেল বেসরকারিকরণের মতন সিদ্ধান্ত। রাজনৈতিক পর্যালোচকদের অনেকের কথায়, শেষবেলায় অতিমারি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের ভূমিকাকেও ভালভাবে নেয়নি রাজ্যের মানুষ। তাই সব মিলিয়ে রাজনৈতিক সচেতন মানুষ দুর্নীতি ইস্যুকে দুহাজার একহশের নির্বাচনে একেবারেই মান্যতা দেয়নি।               

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.