
দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হতেই দেশজোড়া লকডাউনে থমকে গিয়েছিল ভারতীয় রেলের চাকা। এরপর করোনা সংক্রমণ দ্রুততার সঙ্গে বাড়তে থাকায় হাসপাতালে বেডের অভাব দেখা দিতে পারে এই আশঙ্কায় রেল এক অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নেয়। রেলের কামরাই আইসোলেশন ওয়ার্ডে পরিণত করতে শুরু করে তারা। করোনা রোগীদের জন্য দূরপাল্লার ট্রেনের কামরাগুলিকেই পরিমার্জিত করে আইসোলেশন কোচ বানিয়েছে রেলের বিভিন্ন ওয়ার্কশপ। ছয় থেকে সাতটি কামরা জুড়ে তৈরি হয়েছে একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড। তাতে যেমন রয়েছে করোনা আক্রান্তদের থাকার জায়গা তেমনই রয়েছে স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের জন্য একটি বিশেষ কোচ। কামরাগুলির বাথরুমগুলিকে পরিবর্তিত করা হয়েছে আধুনিকভাবে। যাতে স্নান করতে কোনওরকম অসুবিধা না হয়।

তবে পূর্বরেল সূত্রে জানা যাচ্ছে তাঁদের আইসোলেশন কোচগুলি পড়ে থেকেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কোনও কোনও জায়গায় সেই কামরাগুলিতে গজিয়েছে আগাছাও। কিন্তু কেন এমন হল? রেলের আধিকারিকদের দাবি, রাজ্য সরকার তাঁদের থেকে এখনও এই আইসোলেন কোচ চায়নি। তাই করোনা রোগীদের জন্য সেগুলি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। পূর্ব রেলের ডিআরএম আগেই জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার যদি চায়, তবে ওই বিশেষ কোচগুলি অবশ্যই ব্যবহার করতে পারে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন আমাদের এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। অপরদিকে রাজ্যের দাবি, তাঁরা নাকি কিছুই জানে না। এই ব্যাপারে রেল নাকি জানায়নি রাজ্যকে। শিয়ালদা, হাওড়া ও আসানসোল ডিভিশনে এরকম বহু কোচ অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে। আসানসোল ডিভিশনে এরকম দশটি আইসোলেশন কোচ পড়ে রয়েছে বিগত আড়াই মাস ধরে।

একই হাল শিয়ালদা ডিভিশনে, এখানেও কয়েকটি স্টেশনে দাঁড় করানো রয়েছে এরকম কয়েকটি আইসোলেশন কোচ। বিশেষজ্ঞদের মতে রেল-রাজ্য সমন্বয়ের অভাবেই রেলের এই বিশেষ আইসোলেশন কোচগুলি অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বেশ কয়েকটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কোভিড হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। ফলে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও বেডের অভাব হয়নি। কিন্তু করোনার চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত একাংশের ধারণা করোনা চিকিৎসায় রেলের এই কোচগুলি খুবই সূবিধাজনক হত। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই দেশের ২১৫টি স্টেশনে এই ধরনের আইসোলেশন কোচ দেওয়া হয়েছে করোনার চিকিৎসার জন্য। যেখানে মৃদ উপসর্গযুক্ত রোগীদের চিকিৎসা চলছে।
Post a Comment
Thank You for your important feedback