অবরোধ, বিক্ষিপ্ত অশান্তি রেলে-সড়কে, বাম-কংগ্রেসের বনধে ভোগান্তি সাধারণের

বিরোধী দলগুলির কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে দেশজুড়ে চলছে সাধারণ ধর্মঘট। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পথে নামলেন বাম ও কংগ্রেস সমর্থকরা। রেলপথে ও রাস্তা অবরোধের জেরে ভোগান্তি সাধারণ মানুষের। বেশ কয়েকটি এলাকায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর পাওয়া গিয়েছে। শিয়ালদা মেন, উত্তর ও দক্ষিণ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধের জেরে কার্যত থমকে রয়েছে লোকাল ট্রেন। ফলে অফিস ও নিত্যযাত্রীরা আটকে রয়েছেন বিভিন্ন স্টেশনে। কলকাতাকে সচল রাখতে কড়া পুলিশি বন্দোবস্ত রেখেছে রাজ্য সরকার। 

এদিন সকাল থেকে রাস্তায় পর্যাপ্ত সরকারি বাস থাকলেও তুলনায় অনেক কম বেসরকারি বাস। কলকাতার বেহালা, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, যাদবপুরে রাস্তা অবরোধ করে বাম কর্মীরা। অপরদিকে রাজাবাজার মোড় অবরোধ করে কংগ্রেস কর্মীরা। যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ডে সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পথ অবরোধ করে বাম ও কংগ্রেস যৌথভাবে। কলকাতার ধর্মতলায় রাস্তার ওপর টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ। কলেজ স্ট্রিটও অবরোধ হয়। 


একইভাবে বাম-কংগ্রেস যৌথভাবে যশোর রোড অবরোধ করা হয়েছে দমদম নাগেরবাজারে, মধ্যমগ্রামে, বারাসত চাঁপাডালি মোড়ে। ব্যারাকপুরের চিড়িয়ামোড়ে বিটি রোড ও ঘোষপাড়া রোডের সংযোগস্থলে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করেন বনধ সমর্থককারীরা। বেলঘড়িয়া উড়ালপুলের সামনে অবরোধ করা হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকজন বাম কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন পুলিশের লাঠিতে।

সকাল ১০টা নাগাদ বারাসত হেলাবটতলা মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বনধ সমর্থকরা। বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে অবরোধ তুলতে গেলে রণক্ষেত্রের চেহাড়া নেয় বারাসত হেলাবটতলা মোড়। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। নামানো হয় র‍্যাফ। পুলিশ অবরোধকারীদের ওপর লাঠি চালায়। পুলিশের লাঠিতে জখম হয়েছেন মহিলা সহ বেশ কয়েকজন বাম কর্মী। এর আগে বনধ সমর্থককারীদের সঙ্গে পুলিশের বচসায় উত্তপ্ত হয়েছে বারাসতের ডাকবাংলো মোড়। দুর্গাপুর স্টেশনেও অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাধে।

সড়ক পথের পাশাপাশি রেলপথেও অবরোধ ভোগান্তি সকাল থেকেই। বিভিন্ন স্টেশনে অবরোধের জেরে ব্যহত রেল পরিষেবা। শিয়ালদা মেন শাখায় ইছাপুর, শ্যামনগর, বেলঘরিয়া,  আগরপাড়া, ও টিটাগড় স্টেশনে অবরোধ হয়। শিয়ালদা-বনগাঁ শাখাতেও অবরোধে অচল পরিষেবা। এই শাখার বারাসত, নিউ ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম স্টেশনে রেল অবরোধ হয়েছে। মধ্যমগ্রামে ট্রেন লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ উঠেছে। শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার সুভাষগ্রাম স্টেশনে সকাল ৭টা থেকেই শুরু হয় অবরোধ। 

এই শাখার লক্ষীকান্তপুর, নামখানা, ডায়মন্ডহারবার ও ক্যানিং লাইন অবরোধে বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা। শিয়ালদা-ডায়মন্ড হারবার লাইনের একাধিক জায়গায় ওভারহেড তারে কলাগাছ ফেলে ট্রেন বন্ধ করা এবং বিক্ষোভের খবর মিলেছে। ক্যানিংয়ের বিভিন্ন স্টেশনেও রেল অবরোধ হয়েছে। যদিও বারুইপুর ও সোনারপুর থেকে লোকাল ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। বজবজ পর্যন্ত ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক। 

হাওড়া শাখার শ্রীরামপুর ও চন্দননগরে অবরোধে ব্যহত ট্রেন চলাচল। ডোমজুড় স্টেশনের কাছে গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ দেখায় অবরোধকারীরা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, বনধ চুরান্ত সফল। রাস্তায় বাস চললেও লোকজন নেই। রাজ্য সরকার জোর করেই বনধ আটকানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল সরকার। তিনি আরও দাবি করেন, তৃণমূল বনধের বিরোধিতা করায় আরও পরিস্কার হল বিজেপির সঙ্গে তাঁদের আঁতাত।



Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post