অমানবিক! হাত-পায়ে দড়ি বেঁধেই চিকিৎসা রোগীর

হাত-পায়ে দড়ি বেঁধেই চিকিৎসা চলল করোনা আক্রান্ত এক রোগীর। এমনই অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠল চন্দননগরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। ইতিমধ্যেই ওই বেসরকারি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং চুঁচুড়া মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই রোগীর স্ত্রী।

পরিবারের দাবি, বছরখানেক ধরেই পেটের অসুখে ভুগছিলেন চুঁচুড়া তোলাফটকের বাসিন্দা বছর ৬২ এর প্রাক্তন বেসরকারী কর্মী শোভন সাঁধু। ২৩ ডিসেম্বর পেটের রোগের চিকিৎসার জন্য  চন্দননগরের একটি বেসরকারী নার্সিংহোমে ভর্তি হন তিনি। নিয়ম মেনে শুরুতেই শোভনবাবুর করোনা পরীক্ষা করা হয়। ২৪ তারিখ আসা সেই রিপোর্টে দেখা যায় তিনি নেগেটিভ। এরপর ওই হাসপাতালের আইসিইউতে রেখেই তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। প্রাক্তন ওই বেসরকারী কর্মীর অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভাল নয়। এদিকে নার্সিংহোমের বিলও ক্রমাগত বাড়তে থাকায় বাধ্য হয়েই চলতি মাসের দু'তারিখ শোভনবাবুকে সেখান থেকে চুঁচুড়া হাসপাতাল রোডের অন্য একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ৱ্যাপিড টেস্ট করতেই দেখা যায় শোভনবাবু করোনা পজেটিভ। ওই নার্সিংহোমে করোনা রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় তাঁকে মল্লিক কাশেম হাটের একটি করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

তবে ওই হাসপাতালে পোশাক পরিবর্তনের সময়ই  শোভন সাঁধুর হাতে রক্ত জমাটের পাশাপাশি একপায়ে দগদগে ঘা চোখে পড়ে হাসপাতাল কর্মীদের। তাঁকে এনিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানান, শুরুতে চন্দননগরের ওই নার্সিংহোমে তাঁর হাত-পা বেঁধে চিকিৎসা করা হয়েছিল। ব্যাথায় কষ্ট পেয়ে বারবার আবেদন করলেও  প্রথম কয়েকদিন তাঁকে বাঁধনমুক্ত করা হয়নি। অভিযোগ, তিনি পেটের যন্ত্রনায় ছটফট করছিলেন  বলেই এই বাঁধন। ফলে শোভনবাবুর হাতে-পায়ে রক্ত জমাটের পাশাপাশি দগদগে ঘা হয়ে গেছে। 

এদিকে স্বামীর সেই ক্ষত দেখে দু'চোখে জল ধরে রাখতে পরেননি স্ত্রী কাকলি দেবী। তাঁর দাবি, প্রথমে করোনা না থাকলেও ওই হাসপাতাল থেকেই করোনা সংক্রমণ হয়েছে শোভনবাবুর। এই অমানবিক অত্যাচারের সুবিচার চেয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন তিনি। ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবিতে অভিযোগ জানানো হয়েছে চুঁচুড়া সদর মহকুমাশাসক ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। এবিষয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন,'আমি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে’। অন্যদিকে চন্দননগরের অভিযুক্ত নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি। 

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.