করোনা যোদ্ধাদের বিনামূল্যে টিকা দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী, উঠল প্রশ্নও

রাজ্যের মানুষকে বিনামূল্যেই করোনার টিকা দিতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগেই তিনি এই রকম ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার রাজ্যের সমস্ত করোনা যোদ্ধাদের বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে বলে সরাসরি খোলা চিঠি দিলেন তিনি। রাজ্যের সমস্ত জেলার পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্তাদের কাছেই মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ওই চিঠি পৌঁছে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। যা খুব শীঘ্রই বিভিন্ন থানা এবং স্বাস্থ্য দফতরের অফিসগুলি থেকে বিলি করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ইচ্ছাপ্রকাশের পর রাজনৈতিক মহলে উঠছে নানান প্রশ্ন। বিরোধী দলগুলি সরাসরি দাবি করছেন, ভোটের আগে চমক দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে ১০ কোটি বাসিন্দা রয়েছেন। প্রত্যেককে বিনামূল্যে করোনার টিকা দিতে গেলে রাজকোষে প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকার বোঝা চাপবে। এই পরিস্থিতিতে এই বিপুল পরিমান টাকা কোথা থেকে আসবে সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক মহল। আবার শুধুমাত্র কোভিড যোদ্ধাদেরই বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করে সরকার তবুও খরচের বহর কম হবে না। প্রশাসনের শীর্ষ মহলের অভিমত, মুখ্যমন্ত্রী যখন ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন তখন সেটা মানতেই হবে। ভাবতে হবে এটাই রাজ্য সরকারের নীতিগত অবস্থান। উল্লেখ্য, করোনা মোকাবিলায় কলকাতা পুলিশের ২০ জন কর্মী আধিকারিক সহ বেশ কয়োকজন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। 

বিরোধী মহল অবশ্য দাবি করছেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়ার কথা বলে জনমানসে একটা ‘ইতিবাচক’ হাওয়া তৈরি করতে চাইছেন। যাতে ভোটের বাজারে তাঁর দল সুবিধা আদায় করে নিতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি সামনে আসার পরই পাল্টা টুইট করে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। তিনি টুইটে লিখেছেন, রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে প্রহসন করছেন তৃণমূল নেত্রী। নির্লজ্জতার সীমা নেই। 

 ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, করোনার গণ টিকাকরণ খুবই দীর্ঘকালীন প্রক্রিয়া। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি অনুযায়ী টিকা দিতে হলে প্রথমে প্রথম সারির করোনা যোদ্ধাদের দেওয়া হবে টিকা। তাঁরা এমনিতেই বিনামূল্যে টিকা পাবেন বলে ঘোষণা করেছে কেন্দ্র।এরপর বিভিন্ন স্তরের করোনা যোদ্ধাদের চিহ্নিত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে টিকা। তাঁরাও বিনামূল্যে টিকা পাবেন। আবার সরকারি স্তরে টিকা নিতে হলেও তালিকা দীর্ঘ হবে। সেক্ষেত্রে টিকার যোগান এলে তবেই তালিকা অনুযায়ী পাওয়া যাবে প্রতিষেধক। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন, অনেকেই অপেক্ষা না করে বেসরকারিভাবে টিকা নিয়ে নিতে পারেন। ফলে রাজ্য সরকার বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়ার প্রস্তাবের সারবত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post