লালফিতের ফাঁসে থমকে সুন্দরবনের রেল সম্প্রসারণ, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

কেন্দ্র-রাজ্যের দড়ি টানাটানির জের। কোটি কোটি টাকা খরচ ও বাজেট পাশ হওয়ার পরেও বন্ধ মাতলা রেল ব্রিজের কাজ। লালফিতের ফাঁসে আপাতত বিশ বাঁও জলে সুন্দরবনের ক্যানিং-ঝড়খালি লাইন সম্প্রসারণ। বেশ কয়েকবছর ধরেই সুন্দরবনের সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ মসৃণ করার জন্য ট্রেন লাইন সম্প্রসারণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন সুন্দরবনবাসী। অভিযোগ, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনও সুরাহা হয়নি। উপরমহলের নির্দেশ পেয়ে কিছুদিন নড়েচড়ে বসলেও প্রকল্পের কাজ এখনও পর্যন্ত সেই তিমিরেই রয়েছে। ক্ষোভে ফুঁসছেন সুন্দরবনবাসী। এনিয়ে রেলমন্ত্রকের দাবি, রাজ্য জমি অধিগ্রহণ না করার জন্যই থমকে রয়েছে কাজ। 

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সাল থেকে নিজেদের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন বাসিন্দারা। ওই বছর সুন্দরবন কৃষ্টি মেলায় উপস্থিত লোকসভার স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে সুন্দরবনবাসীর গণস্বাক্ষর সম্বলিত আবেদনপত্র তুলে দেন সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের প্রাক্তন সদস্য লোকমান মোল্লা। দিল্লি ফিরে সেই বিষয়টি নিয়ে তদানীন্তন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবকে চিঠিও দেন লোকসভার স্পিকার। এরপরে ২০০৯ সালে পরবর্তী রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাতলা নদীর উপরে রেল ব্রিজ তৈরির প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। ২১টি পিলারও তৈরি হয়। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত দীর্ঘ সময় থমকে রয়েছে কাজ। 

লোকমান মোল্লা জানান, ২০১৩ সালে রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরী মাতলা রেল ব্রিজের ক্যাম্পে অফিসে বৈঠক করে কাজ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দেন। এরপর কিছুদিন কাজের পর আবার বন্ধ হয়ে যায়। ফের কেন্দ্রীয় কৃষি রাষ্ট্রমন্ত্রী সুরেন্দ্র সিং আলুওয়ালিয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর হাতে চিঠি ও ছবি তুলে দেন তাঁরা। তারপর দিল্লি নড়েচড়ে বসলেও ফের যে কে সেই। পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন এ কে ভৌমিক চিঠি লিখে লোকমান মোল্লাকে জানান, ক্যানিং-ঝড়খালি রেললাইনের সার্ভের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। জমির অধিগ্রহণের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা এ ডি এম এল এ কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, এছাড়া মাতলা নদীর উপরে ব্রিজের কাজ শুরু হলেও আবার তা বন্ধ হয়। 

সুন্দরবনবাসীর দাবি, এই ব্রিজ তৈরি হলে দ্রুত ঝড়খালি থেকে ক্যানিং হয়ে কলকাতায় পৌঁছাতে পারবেন তাঁরা। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী রাজ্যের পক্ষ থেকেও বিশেষ সহায়তা পাননি তাঁরা।ফের রেল রাষ্ট্রমন্ত্রী রাজেন গহিনের সঙ্গে দেখা করে ও পীযূষ গোয়েলকে নতুন করে আবেদনপত্র দিয়েছেন লোকমান মোল্লা। কিন্তু এরপরেও যদি কাজ না হয় তাঁরা বড় ধরনের আন্দোলনের পথে নামবেন। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post