নির্বাচন শেষ হতে হতে মমতা দিদি জয় শ্রী রাম বলবেন, কোচবিহারে অমিত তোপ

রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ফের রাজ্য সফরে এলেন বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি বাগডোগরা হয়ে কোচবিহার পৌঁছান। সেখানে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়েই ছুটলেন রাসমেলা ময়দানে। যোগ দিলেন এক দলীয় জনসভায়। তার আগেই রাসমেলা ময়দানের কাছেই পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মালাও দিলেন। সভায় বক্তৃতা দেওয়ার পরই তিনি উত্তরবঙ্গে বিজেপির পরিবর্তন রথযাত্রার সূচনা করবেন। এদিনের ভাষণে তিনি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন যথারীতি। এছাড়া স্থানীয় জনজাতির উদ্দেশে আহ্বান জানান যে আসন্ন ভোটে তাঁরা যেন বিজেপির সঙ্গেই থাকেন। তাঁর মুখে শোনা গেল ‘চলো পাল্টাই’ স্লোগান। 

অমিত শাহ এদিন বলেন, ‘এখানে কোচ-রাজবংশী, গোর্খা ভাইদের কাছে একটা আর্জি নিয়ে এসেছি। আপনারা শপথ নিন, এবার পরিবর্তন আনতেই হবে। সবাই মিলে প্রতিজ্ঞা করুন, চলো পাল্টাই’। তিনি আরও দাবি করলেন, ক্ষমতায় এলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সোনার বাংলা বানিয়ে দেবেন। অমিত শাহর অভিযোগ, গত পাঁচ বছরে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে প্রচুর টাকা দিয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ভাইপো সেই টাকা আত্মসাৎ করেছে। তাঁর প্রশ্ন, মমতা দিদি সবসময় প্রধানমন্ত্রীজির সঙ্গে ঝগড়া করেন, তাতে কী রাজ্যের উন্নতি হবে? এরপরই তাঁর দাবি, ‘বাংলার ১৩০ জনেরও বেশি বিজেপি কর্মী সমর্থক খুন হয়েছেন। কিন্তু আমি এই মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করছি, যারা এই খুনের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের বেছে বেছে জেলে পোরা হবে। আমরা ভোটের সময় দেখে নেব, কেউ আপনাদের ভোট দিতে বাধা দিতে পারবে না’। 

এদিন জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে তৃণমূল নেত্রীর আপত্তি নিয়েও অমিত শাহ নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন কোচবিহারে। তাঁর প্রশ্ন, জয় শ্রী রাম এখানে বলবে না তো কি পাকিস্তানে বলবে? জয় শ্রী রামে আপনার অপমান লাগে কেন? আসলে আপনার অপমান লাগে, একটা বিশেষ সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করার জন্য। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, আমি কথা দিচ্ছি, নির্বাচন শেষ হতে হতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয় শ্রী রাম বলবেন।

এরপরই অমিত শাহর হুঁশিয়ারি, বাংলায় অনুপ্রবেশ রুখে দেব, একটা মশাও গলতে দেব না। তিনি বলেন, এখানে অনন্ত মহারাজের সঙ্গে দেখা করেছি। আমাদের সুযোগ দিন, মানুষ তো ছেড়ে দিন, একটা পাখিও ঢুকতে পারবে না। আপনারা অনুপ্রবেশ সমস্যা নিয়ে জেরবার নন? যুবকদের কাজ, কৃষকদের অবস্থা পাল্টানোর, তাঁদের গরিবি দূর করা, হিংসার জায়গায় শান্তির জন্য এই পরিবর্তন যাত্রা। মুখ্যমন্ত্রীর নারায়নী পুলিশ ব্যাটেলিয়নের পাল্টা এদিন প্যারা মিলিটারির একটি ব্যাটেলিয়নের নাম নারায়ণী সেনার নামে রাখার কথাও বলে জানান, নারায়ণী সেনার নাম শুনে মোঘলরা দিনের বেলায় তারা দেখিছিলেন। এই সেই ভূমি, আর এখন সেই ভূমিকে অনুপ্রবেশকারীদের ভরিয়ে দিচ্ছে শাসকদল। যদিও শাসকদলকে রাজনৈতিক আক্রমণই শুধু করেননি অমিত শাহ। তিনি এদিন কোচবিহার ও উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য তাঁর চিন্তাভাবনার কথাও জানান। অমিত শাহ বলেন, এখানে রাজবংশী সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার মূর্তি তৈরি হবে ২৫০ কোটি টাকা খরচ করে। একে ঘিরেই তৈরি হবে টুরিস্ট সার্কিটও। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post