ভেকধারী সরকারের ফেকধারী বাজেটঃ কটাক্ষ মমতার

চারদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তিনি শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন করেন। ওই মঞ্চ থেকেই তিনি কেন্দ্রীয় বাজেটের তীব্র সমালোচনা করেন এদিন। চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি ২০২১ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটকে ‘হুক্কাহুয়া বাজেট’ আবার কখনও ‘ভেকধারী সরকারের ফেকধারী বাজেট’ বলেও কটাক্ষ করেন মমতা। এদিন উত্তরবঙ্গ উৎসবের সূচনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এরা সব বিক্রি করে দেবে। সমস্ত সরকারি ক্ষেত্র বিক্রি করে দেবে, এক দিন গোটা দেশকেই বিক্রি করে দেবে। ব্যাঙ্ক থেকে বিমা, রেল, সেল, ভেল— সবই বেচে দেবে’। উল্লেখ্য, এদিন কেন্দ্রীয় বাজেট ভাষণে নির্মলা সীতারামণ জানান, বিমাক্ষেত্রে ৭৪ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগে ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এরই প্রতিবাদ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়েছেন ‘এরপরও কি আপনারা ভোট দেবেন?’ 

এদিনের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলার জন্য বড় বরাদ্দ করা হয়েছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের রাস্তার উন্নয়নে ২৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গও উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তিনি বলেন, ‘এখন বলছে গ্রামীণ রাস্তা বানাবে, আমার কোনও দরকার নেই, গ্রামে সব রাস্তা তৈরি হয়ে গিয়েছে। ভোটের আগে নাকি বাংলায় রাস্তা বানাবে! বাংলায় করতে হবে না। আমি রাস্তা করে দেব’। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব কৃষকরা আন্দোলনে বসে আছেন, এই রাস্তা তৈরির টাকা তাঁদের গিয়ে দিয়ে দিক কেন্দ্র’। 

এদিন শিলিগুড়ি থেকে আসন্ন বিধানসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের মানুষদের কাছে ভোট প্রার্থনাও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চ থেকেই তিনি বলেন, ‘গত লোকসভা ভোটে আমি গো-হারা হেরেছিলাম। আমি জানি,  এই বিধানসভা ভোটে আপনারা সেটা পুষিয়ে দেবেন’। উল্লেখ্য, বিগত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের ৮টি আসনের মধ্যে ৮টিতেই হেরেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এরমধ্যে ৭টিতে বিজেপি এবং একটি আসনে কংগ্রেস জিতেছিল। ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে যথেষ্ট চাপে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এই ড্যামেজ কন্ট্রোল করাটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। ফলে তিনি এদিন উত্তরবঙ্গে উন্নয়নের খতিয়ান দিয়েছেন নিজের ভাষণে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তরবঙ্গকে কেউ গুরুত্ব দিতেন না, কিন্তু আমি উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ এক নজরে দেখি, মাঝে মধ্যেই উত্তরবঙ্গে আসি’। আগামী ৪ তারিখ পর্যন্ত উত্তরবঙ্গেই থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি একাধিক দলীয় কর্মসূচিতেও যোগ দেবেন তিনি। ফলে দেখার বিষয় তিনি ড্যামেজ কন্ট্রোল করে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলকে হারানো কতটা জমি ফিরিয়ে দিতে পারেন। 


Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post