পুলিশ সুপার এবং বিশেষ পর্যবেক্ষকের রিপোর্টেও ‘আত্মরক্ষায় গুলি’

চতুর্থ দফার ভোটপর্ব শেষ। এই দফাতেই সবচেয়ে উত্তপ্ত এবং রক্তাত্ব হল বাংলা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে প্রাণ গিয়েছে চার যুবকের। তৃণমূলের দাবি, এরা প্রত্যেকেই তাঁদের দলীয় কর্মী। আর অন্য একটি ঘটনায় প্রথমবার ভোট দিতে এসে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক তরুণের। বিজেপির দাবি ওই তরুণ বিজেপি কর্মী। সবমিলিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হল শনিবার ভোট চলাকালীন। যা কার্যত নজিরবিহীন বলেই জানাচ্ছেন ওয়াকিবহাল মহল। এই ঘটনা নিয়ে গোটা বাংলাই শোকস্তব্ধ। শীতকুচির ঘটনা নিয়ে সরব তৃণমূল। তাঁদের দাবি, বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। 

 

এদিন সকালে ঘটনার পরই জেলা প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করে নির্বাচন কমিশন। সেই সঙ্গে রাজ্যে নিযুক্ত বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দূবের কাছেও রিপোর্ট তলব করেছিল কমিশন। সূত্রের খবর সেই রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে কমিশনে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দেবাশীষ ধর সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দিলেন, আত্মরক্ষার জন্যই গুলি চালিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাঁর আরও চাঞ্চল্যকর দাবি, সিআরপিএফ-র বন্দুক নাকি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল এবং ব্যালট-ইউনিট ছিনতাইয়ের চেষ্টাও হয়েছিল। প্রায় ৩০০-৩৫০ গ্রামবাসী তাঁদের ঘিরে ধরেন। এরপর কুইক রেসপন্স টিমকে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হতে থাকে এবং বুথে ঢোকার চেষ্টা করেন উত্তেজিত গ্রামবাসী। ফলে আত্মরক্ষার্থেই ১৫ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বাহিনী। 

 


প্রসঙ্গত, কোচবিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কো-অর্ডিনেটর পুলিশ সুপার সয়ং। অন্যদিকে, বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভোটদানে বাধার অভিযোগ পেয়ে এদিন সকাল ৯টা ৩৫ নাগাদ কমান্ডার ইন্সপেক্টর সুনীল কুমারের নেতৃত্বে কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা সেখানে যায়। এরপর তাঁদের ৫০-৬০ জন ঘিরে ধরেন। সেই গোলমালে একজন শিশুও পড়ে যায়। সেই সুযোগে জওয়ানদের আক্রমণ করে গ্রামবাসীরা। তখনই আত্মরক্ষার্থে শূন্যে ৬ রাউন্ড গুলি চালায় কুইক রেসপন্স টিম। 


অপরদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে বলে কমিশনকে রিপোর্ট দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দূবে। কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে তিনি জানিয়েছেন, শীতলকুচির জোড় পাটকির যে ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানে তৃণমূল এবং বিজেপি-র মধ্যে ঝামেলা চলছিল। তাতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ব্যহত হচ্ছিল। খবর পেয়ে সেখানে কুইক রেসপন্স টিম পাঠানো হয়। এর পর দু’পক্ষের সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করে। সেই পরিস্থিতি সামলাতে ময়দানে নামে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু গ্রামের মানুষ তাঁদের ঘিরে ধরেন এবং তাঁদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। সেই সময় আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। 

Post a Comment

Thank You for your important feedback

Previous Post Next Post